ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বগুড়ায় ইউনিয়ন নির্বাচন বিতর্কিত, কারচুপির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

মাহফুজ মণ্ডল, বগুড়া

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ৩১ মে ২০২৫

বগুড়ায় ইউনিয়ন নির্বাচন বিতর্কিত, কারচুপির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একাধিক প্রার্থী। শনিবার (৩১ মে) বগুড়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তারা নির্বাচন বাতিল করে পুনঃগণনার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৩ মে ২০২৫ তারিখে বগুড়া সরকারি জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় ইউনিয়নের নির্বাচন। সেখানে সাংগঠনিক সম্পাদক পদের ব্যালটে কোথাও ৫ জন, কোথাও ৪ জন প্রার্থীর ছবি ছাপানো হয়, যা ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে একটি ‘অপকৌশল’ হিসেবে উল্লেখ করেন তারা। এছাড়াও, প্রার্থীদের গলায় ঝুলানো পরিচিতি কার্ডেও ছিল নানা ভুল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য।
নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রকাশ্যে প্রভাব খাটানো, বহিরাগতদের মাধ্যমে জাল ভোট প্রদান, ব্যালট পেপারে অবৈধ সীল মারা এবং ফলাফল শিটে কাটাকাটি ও ঘষামাজার অভিযোগও আনেন তারা। অভিযোগ করা হয়, ভোট শেষ হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা আগে প্রায় ১০০-১৫০ জন বহিরাগত ব্যক্তি দেয়াল টপকে প্রবেশ করে অবৈধভাবে ব্যালটে সীল মারে। যদিও বিষয়টি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাড. আব্দুল বাছেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে দাবি করেন তারা।
ভোটার সংখ্যা নিয়ে গরমিলের বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রার্থীরা। তাদের মতে, ভোটার সংখ্যা ছিল ২১,৪৭২ জন এবং ভোট কাস্ট হয় ১৬,৮৮৩টি। কিন্তু জমা দেওয়া আইডি কার্ডের সংখ্যা এবং কাস্টকৃত ভোটের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা গেছে। ফলে অনেক শ্রমিক বিভ্রান্ত হয়ে ভোট না দিয়েই ফিরে যান।
এছাড়া প্রার্থীরা দাবি করেন, নির্বাচন পরিচালনার জন্য যৌথ বাহিনীর তত্ত্বাবধান দাবি করা হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। নির্বাচনটি শুধু একটি বিশেষ দলের অনুগামী প্রার্থীদের দাপটে পরিচালিত হয়েছে এবং বাকিদের কার্যত নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, এ নির্বাচন ছিল কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নয়। এতে প্রার্থীদের প্রকৃত ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে এবং ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী প্রার্থীরা ইতিমধ্যে ২৮ ও ২৯ মে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শ্রম অধিদপ্তর, প্রেস ক্লাব এবং বগুড়া সেনা এরিয়া কমান্ডারের কাছে। আবেদনপত্রে তারা ভোটের পুনঃগণনা ও তদন্ত দাবি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সাংবাদিক সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আপনারা নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি তুলে ধরুন, যেন সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে ভোটের ফলাফল পুনরায় গণনা ও পর্যালোচনা করা হয় এবং ভোটাধিকার ফিরে পায় বগুড়ার শ্রমিক সমাজ।”
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন সভাপতি পদপ্রার্থী মো. আব্দুর রাজ্জাক (খেজুরগাছ প্রতীক), সহ-সভাপতি সমশের আলী (পানপাতা), রফিকুল ইসলাম (রেহাল), সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান সোহেল (হারমোনিয়াম), ধর্মীয় সম্পাদক হজরত আলী (জিরাফ), প্রচার সম্পাদক ঠান্ডু মন্ডল (টেলিফোন), ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক (সেলাই মেশিন) সহ মোট ২৩ জন প্রার্থীসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিক।

Jahan

×