ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেক্সিকোর গুনাজুয়াতোতে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভয়াবহ আগুন, নিহত ১২

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২ জুন ২০২৫

মেক্সিকোর গুনাজুয়াতোতে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভয়াবহ আগুন, নিহত ১২

ছবি: সংগৃহীত

মেক্সিকোর সহিংসতায় জর্জরিত গুনাজুয়াতো রাজ্যের একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১২ জন নিহত এবং আরও অন্তত ৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

রবিবার (১ জুন) স্থানীয় সময় ভোরে সান হোসে ইতুরবে শহরের ওই নিরাময় কেন্দ্রে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। শহরের পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।

এক বিবৃতিতে পৌর সরকার বলেছে, “আমরা সেই সব পরিবারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি, যারা নেশা কাটিয়ে উঠতে চাওয়া আপনজনদের হারিয়েছেন।” এছাড়া নিহতদের দাফন-কাফনের খরচ বহনে সহায়তা করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

কেন্দ্রটির ভেতরে তালাবদ্ধ ছিলেন রোগীরা
মেক্সিকোর বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগুন লাগার সময় নিরাময় কেন্দ্রটির ভেতরে যারা ছিলেন, তারা তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। ফলে তাদের বের হয়ে আসার সুযোগ ছিল না।

উল্লেখ্য, মেক্সিকোতে বেসরকারিভাবে পরিচালিত মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলো প্রায়ই অনিয়ন্ত্রিত, গোপনীয়, অব্যবস্থাপনায় ভরা এবং অর্থসঙ্কটে ভুগে থাকে। বহু কেন্দ্রেই রোগীদের প্রতি নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে, এবং এসব কেন্দ্র অতীতেও নানা হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

অপরাধপ্রবণ অঞ্চলে মাদকচক্রের দৌরাত্ম্য
গুনাজুয়াতো রাজ্যটি মেক্সিকোর একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও কৃষি অঞ্চল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানে তীব্র রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে স্থানীয় সান্তা রোসা দে লিমা কার্টেল ও শক্তিশালী জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেলের (CJNG) মধ্যে। এর ফলে গুনাজুয়াতো এখন মেক্সিকোর সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া রাজ্যে পরিণত হয়েছে।

নিরাময় কেন্দ্র লক্ষ্য করে অতীতেও হামলা
নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে অতীতে একাধিক ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালে গুনাজুয়াতোর ইরাপুয়াতো শহরে একটি নিরাময় কেন্দ্রে সশস্ত্র হামলায় ২৭ জন নিহত হন। তার আগে, ২০১০ সালে উত্তরাঞ্চলীয় শহর চিহুয়াহুয়ায় আরেকটি নিরাময় কেন্দ্রে হামলায় নিহত হন ১৯ জন। গত এক দশকে এমন আরও এক ডজন হামলার ঘটনা ঘটেছে।

মাদকচক্রগুলো প্রায়ই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংয়ের সদস্যদের খুঁজে বের করতে নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালায়। যেসব ব্যক্তি মাদক সেবন থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করেন, তাদেরও এই সহিংসতার বলি হতে হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে সরকারকে নিরাময় কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ ও নীতিমালার দিক থেকে আরও কঠোর হতে হবে।

ফরিদ 

×