নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা ছাড়া পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান

ইরান বলেছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো পারমাণবিক চুক্তিতে যাবে না। ওয়াশিংটনের তরফ থেকে দ্রুত চুক্তি চাইলেও তেহরানের অবস্থান কঠোর।

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য—তেহরান যেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে নিশ্চয়তা পাওয়া।

তবে ইরান বলছে, তারা আলোচনায় আগ্রহী, তবে এমন একটি চুক্তি চাইছে যা দীর্ঘমেয়াদে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দেবে এবং তাদের অসামরিক উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকারকে স্বীকৃতি দেবে—এটি একটি প্রধান বিতর্কের বিষয়।

তেহরানে এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাঈল বাঘায়ি বলেন, “আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমেরিকান পক্ষ এখনো স্পষ্টভাবে জানাতে পারেনি কীভাবে এই দমনমূলক নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া হবে। স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত কোনো চুক্তি হবে না।”

তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা কেবল আলোচনার আগেই নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ধারা দেখে আসছি, যা আগের অভিজ্ঞতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।”

শনিবার, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর বিন হামাদ আল বুসাঈদি তেহরান সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নতুন প্রস্তাবের খসরা ইরানকে উপস্থাপন করেন।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পূর্ববর্তী পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA) একতরফাভাবে বাতিল করেছিলেন। তিনি সম্প্রতি বলেন, “আমেরিকা চাইলে ইরানের যেকোনো পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দিতে পারবে”—এমন একটি চুক্তি তিনি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন করতে চান।

তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি শামখানি বলেন, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশ করে সেগুলো ধ্বংস করার স্বপ্ন অতীতের অনেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেখেছে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “ইরান একটি স্বাধীন দেশ, যার শক্তিশালী প্রতিরক্ষা, দৃঢ়চেতা জনগণ এবং পরিষ্কার লাল রেখা রয়েছে।”

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুরনো চুক্তি বাতিল করে আরও কঠোর শর্তযুক্ত একটি নতুন চুক্তির প্রস্তাব আনা হয়েছে, এবং জানানো হয়েছে—কূটনৈতিক সমাধান ব্যর্থ হলে সামরিক পদক্ষেপের কথাও বিবেচনায় রয়েছে।

সূত্র: https://l8.nu/-ucO