
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার তার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালীন কর্মকাণ্ড তদন্ত করে দেখতে। তিনি অভিযোগ করেছেন, বাইডেনের উপদেষ্টারা তার ‘মানসিক দুর্বলতা’ আড়াল করেছেন এবং বাইডেন অটোপেন ব্যবহার করে ক্ষমার দলিল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজে স্বাক্ষর করে বেআইনিভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন।
ট্রাম্পের এই নির্দেশকে বিশ্লেষকরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশানা করার ক্ষেত্রে একটি গুরুতর উত্তরণ হিসেবে দেখছেন। তিনি দাবি করেন, বাইডেন প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনে অক্ষম ছিলেন, তবু তার স্বাক্ষর ব্যবহার করে নীতিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।
হোয়াইট হাউজ বা বাইডেনের কোনো প্রতিনিধি এখনো এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দীর্ঘদিন ধরেই স্বীকৃতি দিয়ে আসছে যে, প্রেসিডেন্টরা আইনি দস্তাবেজে অটোপেন ব্যবহার করতে পারেন, এমনকি ক্ষমার আদেশেও। কিন্তু ট্রাম্প দাবি করছেন, এটি বাইডেনের পক্ষে তার উপদেষ্টাদের অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগের প্রমাণ।
ট্রাম্প এই তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এবং হোয়াইট হাউজ কাউন্সেল ডেভিড ওয়ারিংটনকে।
বাইডেন তার দুই ভাই ও এক বোনকে ক্ষমা করেছিলেন প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষের আগমুহূর্তে। সেইসঙ্গে ৬ জানুয়ারির কংগ্রেস দাঙ্গার তদন্ত কমিটির কয়েক সদস্যকেও ক্ষমা করা হয়। ট্রাম্প এটিকে প্রতিশোধমূলক রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখছেন।
এদিকে, প্রতিনিধি পরিষদের ওভারসাইট কমিটির চেয়ারম্যান রিপাবলিকান জেমস কমার পাঁচজন বাইডেন উপদেষ্টার সাক্ষাৎকার চেয়েছেন, দাবি করেছেন তারা বাইডেনের মানসিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং একটি “ঢাকা রাখা চক্রান্তে” অংশ নিয়েছেন।
কমিটি হোয়াইট হাউজের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মাইক ডনিলন, আনিতা ডান, সাবেক চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইন, ডেপুটি ব্রুস রিড এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট উপদেষ্টা স্টিভ রিচেটির সাক্ষাৎকার চাইছে। এ ছাড়াও বাইডেনের চিকিৎসক কেভিন ও’কনরসহ আরও কয়েকজনের জবানবন্দি দাবি করা হয়েছে। না এলে সমন জারি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ডেমোক্র্যাটরা এই তদন্তকে “রাজনৈতিক নাটক” বলে উড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিনিধি জেমি রাসকিন বলেন, “কমার আগেরবার ইমপিচমেন্টে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন আবার এক মিথ্যা স্বপ্ন নিয়ে বাঁচছেন।”
তবে রিপাবলিকানরা এই তদন্তে আগ্রহী। কংগ্রেসম্যান ব্র্যান্ডন গিল বলেন, “আমেরিকার জনগণ জানতে চায় কে সত্যিকারের নেতৃত্ব দিয়েছে, এবং তাদের জানার অধিকার আছে।”
রিপাবলিকানদের দাবি, বাইডেনের শেষ কয়েক সপ্তাহের নির্বাহী আদেশ ও ক্ষমা অকার্যকর হতে পারে। সিএনএনের জ্যাক ট্যাপার ও অ্যাক্সিওসের অ্যালেক্স থম্পসনের লেখা বই "Original Sin"-এ দাবি করা হয়, “পাঁচজন ব্যক্তি দেশ চালাচ্ছিল, বাইডেন কেবল বোর্ডের জ্যেষ্ঠ সদস্য ছিলেন।”
বাইডেন ও তার পরিবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বাইডেনের নাতনি নাওমি বাইডেন বলেছেন, “এই বই চিরাচরিত রাজনৈতিক কল্পগল্প, যা অভিজাত শ্রেণিকে খুশি করে।”
সূত্রঃ dailynews.com
নোভা