
ছবিঃ সংগৃহীত
পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত একটি কারাগার থেকে অন্তত ২১৩ জন বন্দি পালিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। সোমবার রাতের পরপর কয়েকটি ছোট ভূকম্পনের পর সৃষ্ট আতঙ্কের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে, যা পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জেল পালানোর একটি উদাহরণ হয়ে উঠেছে।
সিন্ধু প্রদেশের আইনমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লানজার জানিয়েছেন, ভূকম্পনের কারণে হাজারো বন্দিকে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের সেল থেকে খোলা আঙিনায় নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বন্দিরা পালানোর চেষ্টা করে এবং অনেকেই সফল হয়। রাত পৌনে ১টার দিকে আনুমানিক ২ হাজার বন্দিকে গণনার জন্য বাইরে আনা হয়, তখন থেকেই পালানোর ঘটনা শুরু হয় এবং তা চলে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত।
দেয়াল ভেঙে পালানো, বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে গোলাগুলি
ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে দুর্বল হয়ে পড়া বাইরের দেয়াল দিয়েই বেশিরভাগ বন্দি পালিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু কয়েদি কারা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং গুলি চালায়। এরপর তারা জোরপূর্বক কারাগারের প্রধান দরজা খুলিয়ে পালিয়ে যায়।
এক কয়েদি নিহত, ফেরত আনা হয়েছে ৭৮ জন
ঘটনার সময় পুলিশের গুলিতে একজন কয়েদি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে তিনজন কারাকর্মী। এখন পর্যন্ত ৭৮ জন পালানো বন্দিকে আবার আটক করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিন্ধু পুলিশের মহাপরিদর্শক গুলাম নবি মেমন। তিনি আরও জানান, পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত বা ছোটখাটো অপরাধে জড়িত ছিল।
ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র
রয়টার্সের একজন প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, জেলের ভেতরে ভাঙা কাচ, ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও বন্দিদের সাক্ষাৎকক্ষেও ভাঙচুরের চিহ্ন দেখা গেছে।
‘সেল থেকে বের করাটাই ছিল বড় ভুল’
সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ভূমিকম্পের আতঙ্কে কয়েদিদের সেল থেকে বের করে আনা ছিল "সবচেয়ে বড় ভুল"। যারা পালিয়ে গেছে, তাদেরকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আত্মসমর্পণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের মামলাসহ কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আলীম