ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মার্কিন ভিসা পেতে সোশ্যাল মিডিয়া ’পরিষ্কার’ করছেন ভারতীয় শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১১:০০, ৫ জুন ২০২৫

মার্কিন ভিসা পেতে সোশ্যাল মিডিয়া ’পরিষ্কার’ করছেন ভারতীয় শিক্ষার্থীরা

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে যেতে চাওয়া ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে "ডিজিটাল ক্লিনআপ"। কেউ ফেসবুকের পুরনো পোস্ট মুছে ফেলছেন, কেউ আবার পুরো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টই ডিলিট করে দিচ্ছেন। কারণ মার্কিন ভিসা অফিসাররা এখন শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়া হিস্টোরি দেখে বিচার করছেন, ভিসা দেওয়া হবে কি না!

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে চালু হওয়া এই ‘সোশ্যাল মিডিয়া ভেটিং’ প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীদের গত পাঁচ বছরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার), লিংকডইন ও টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে তাঁদের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক পোস্ট, মতামত বা কোনো ধরনের ‘অগ্রহণযোগ্য’ কনটেন্ট থাকলে সেটিই হতে পারে ভিসা বাতিলের কারণ।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো-প্যালেস্টাইন ও অ্যন্টি-সেমিটিক বিক্ষোভ হয়। এর পরই কড়াকড়ি শুরু করে মার্কিন প্রশাসন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন শুধু পোস্ট নয়—লাইক, শেয়ার, এমনকি মজার রাজনৈতিক মন্তব্যও ভিসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

গ্র্যাডিং ডটকম-এর প্রতিষ্ঠাতা মমতা শেখাওয়াত বলেন, “ইমিগ্রেশন অফিসাররা এখন আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া আইডি খতিয়ে দেখেন সেখানে কী ধরনের রাজনৈতিক বা সামাজিক চিন্তাভাবনা প্রকাশ পেয়েছে, সেটা ভিসা সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।”

তিনি আরও জানান, "হালকা মজা করে করা কোনো পোস্টও ভুল ব্যাখ্যা হতে পারে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে।"

শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, “ডিজিটাল ফুঙ্ক্তিপ্রিন্ট যেন ভারসাম্যপূর্ণ হয়, না অতিরিক্ত প্রাসঙ্গিক, না পুরোপুরি খালি। হঠাৎ সব মুছে ফেললেও সন্দেহ তৈরি হতে পারে।”

 ‘সুরজ’ (ছদ্মনাম) নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমি আগে লিংকডইনে রাজনৈতিক বিষয়ে খুবই সরব ছিলাম। কিন্তু ভিসা অ্যাপ্লাই করার পর আমার কনসালটেন্ট বললেন এটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমি পুরো অ্যাকাউন্টটাই ডিলিট করে দিলাম।”

আরেকজন পিএইচডি গবেষক জানান, তাঁর সোশ্যাল মিডিয়াতে গাজা নিয়ে পোস্ট, নিহতের সংখ্যা, ও দক্ষিণপন্থী শাসনের বিরুদ্ধে লেখা একটি প্রবন্ধ থাকার কারণে তাঁর পোস্ট-ডক্টরাল প্রোগ্রাম সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে যায়। পরে তিনি তাঁর সব অ্যাকাউন্ট মুছে দেন এবং মোবাইল থেকে একাধিক অ্যাপ আনইনস্টল করেন।

মিমিয়া

×