
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
প্রায় ৩০ বছর ধরে পাবনা শহরের পাঁচ মাথা মোড় নিমতলায় ছবি বায়িন্ডিং করে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন গৌতম সাহা। সরকার বদলেছে, বদলেছে দোকানের ছবিও। আওয়ামী লীগের আমলে ছবির দোকান জুড়ে থাকতো শেখ মুজিবুর রহমান,শেখ হাসিনার ছবি। এখন সে ছবির জায়গায় বেশি বিক্রি হচ্ছে জিয়াউর রহমান আর খালেদা জিয়ার ছবি। এখন জিয়াউর রহমান আর খালেদা জিয়ার ছবি বেশি চান।
৩০ বছরের এই বাইন্ডিং জীবনে তিনি বাঁধিয়েছেন অনেক নামি-দামি ছবি। আবার অনেকের বাসা-বাড়ির দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখা বহুদিনের পুরাতন স্মৃতিময় ছবির সাক্ষী তিনি। রাজনৈতিক দলের নেতা, অফিস দপ্তর প্রধান,নিজের তোলা,সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য। কেউ আসেন দূরে কোথাও ভ্রমণের স্মৃতিময় ছবি,কেউবা আপনজন,প্রিয়জন,পরিবারের ছোট-বড় সদস্যদের ছবি বাইন্ডিং করতে।
প্রণয় ষ্টেশনারী এন্ড বাইন্ডিং হাউসের স্বত্বাধিকারী গৌতম সাহা নিজ হাতে যত্ন সহকারে উপকরণ দিয়ে নানান ধরনের ফ্রেমে পারিশ্রমিক এর বিনিময়ে বায়িন্ডিং করে বিক্রি করেন। সাংসারিক কাজ শেষে সময় পেলে এ কাজে তার সহধর্মিনী সাহায্য করে। আর এ থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার। এক সময় তিনি পরিশ্রমের নানা কাজ করতেন। ১৯৯৫ সালের দিকে জীবিকা নির্বাহের জন্য এক পর্যায়ে এই ছবির দোকান গড়ে তুলে ছবি বিক্রি শুরু করে। স্থানীয়দের কাছে তার ছবি বাইন্ডিংয়ের বেশ সুনাম।
ছবি নিতে আসা এক যুবক বলেন,একটা ছবি নিয়ে যাচ্ছি। আমি অনেক দূর থেকে শহরে এসেছিলাম এক কাজে। অনেক আগে থেকেই এই দোকান চেনা। আরও একটি ছবি বাঁধানোর বিষয় কথা বললাম কত কেমন খরচ হবে।
গৌতম সাহা বলেন,আগে ১ হাজার টাকা কাজ করলে যে লাভ করতাম। এখন ৫ হাজার টাকা কাজ করে সেই লাভ করতে হচ্ছে। আগে ১ ফুট গ্লাসের দাম ছিলো ২২ টাকা আর এখন সেই ১ ফুট গ্লাসের দাম হয়েছে ৩৫ টাকা। আগে ঘর ভাড়া দিতাম ৪৫০ টাকা এখন ভাড়া দিতে হয় ১৭ গুণ বেশি। কাঠ, আঠা, লোহা সব কিছুর দাম বাড়তি। তিনি আরও বলেন, ছবি বাঁধানো এখন তার শুধু পেশা নয়, নেশা ও ভালোবাসা। তার এই পেশা আর দোকানের সাথে জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার স্মৃতি জড়িত। বাকিটা জীবন ছবি বাঁধিয়েই কাটিয়ে দিতে চান গৌতম সাহা।
নোভা