
ছবি: সংগৃহীত
বয়স যত বাড়ে, দেহ ও মনের নানা পরিবর্তন আমাদের জীবনে আসে। কিন্তু এমন কিছু খাবার আছে, যেগুলো নিয়মিত খেলে শরীর যেমন রোগ প্রতিরোধ করতে পারে, তেমনই বার্ধক্যের প্রভাবও ধীর হতে পারে। আন্তর্জাতিক পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ানদের মতে, নিচের ৯টি খাবার আমাদের রোজকার খাদ্যতালিকায় যুক্ত থাকলে তা দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে পারে।
১. কিমচি: প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক
কোরিয়ান ঐতিহ্যবাহী এই ফারমেন্টেড সবজি বাংলাদেশেও এখন সহজলভ্য। এতে রয়েছে প্রচুর প্রোবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন ও ভিটামিন সি।
নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান লেনা বাকোভিচ বললেন, “কিমচি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে, যা হজম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।”
২. হলুদের গুঁড়া
প্রতি বাড়ির রান্নাঘরেই থাকা হলুদের কারকিউমিন নামক উপাদান প্রদাহ রোধে অত্যন্ত কার্যকর। এটি আলঝেইমার, আর্থ্রাইটিস এমনকি ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
ডায়েটিশিয়ান দ্রু রোসালেস বলেন,“গোল মরিচের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে হলুদের গুণাগুণ আরও ভালোভাবে শরীর গ্রহণ করতে পারে।”
৩. ব্লুবেরি
এক কাপ ব্লুবেরিতে থাকে প্রচুর অ্যান্থোসায়ানিন, যা হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। বাংলাদেশি প্রেক্ষাপট: দেশীয় ফল যেমন জাম, ব্ল্যাক কারেন্ট বা কালো আঙুরেও অ্যান্থোসায়ানিন থাকে; এগুলোও বিকল্প হতে পারে।
৪. অ্যাভোকাডো
এতে থাকা ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবার হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য অঞ্চলে এখন অ্যাভোকাডো চাষ বাড়ছে।
৫. পালং শাক
লুটেইন ও জ্যাক্সান্থিন নামে দুই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা চোখ ও স্মৃতিশক্তির জন্য ভালো। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল (যেমন লেবু, টমেটো) দিয়ে রান্না করলে আয়রনের শোষণ বাড়ে।
৬. মসুর ডাল
প্রতিটি বাঙালির থালায় থাকা মসুর ডালে আছে ফাইবার, ফোলেট, আয়রন ও প্রোটিন। রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে এর তুলনা নেই।
৭. চিয়া বীজ
ওমেগা-৩, ক্যালসিয়াম ও ফাইবারে ভরপুর এই বীজ রক্তে সুগারের পরিমাণ ঠিক রাখে। এটি এখন ঢাকার বড় দোকান ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।
৮. টেম্পে
টেম্পে একটি ফারমেন্টেড সয়াবিন জাতীয় খাবার। এতে থাকা প্রোবায়োটিক ও ক্যালসিয়াম হজম ও হাড়ের গঠনে সহায়ক। যারা নিরামিষাশী, তাদের জন্য এটি আদর্শ।
পাবলিক হেলথ নিউট্রিশনিস্ট ট্রিস্টা বেস্ট বলেন,“প্রতিদিন অন্তত ৫ রকম ফল ও সবজি, কম চিনি, আর প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চললে জীবনধারায় বড় পরিবর্তন আসবে।”
আমরা অনেক সময় বিদেশি নাম শুনে ভাবি সুপারফুড খুঁজে পাওয়া কঠিন। অথচ বাংলাদেশের বাজারেই এর অনেক উপাদান সহজলভ্য।
মুমু