
ছবিঃ ইন্টারনেট
তীব্র গরমে একটুখানি পানির ছোঁয়াই যেন এনে দেয় অনাবিল শান্তি। এই গরমে অনেকেই একাধিকবার গোসল করে শরীর জুড়াতে চান। তবে প্রশ্ন হলো, প্রতিদিন এতবার গোসল করা কি আদৌ স্বাস্থ্যসম্মত? আর বাস্তবতার নিরিখে সবার পক্ষে তা সম্ভবও নয়। তাই জেনে নেওয়া যাক, গরমকালে কখন গোসল করলে আপনি সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন।
অনেকেরই দিনের শুরুতে গোসল করার অভ্যাস। আবার কেউ কেউ সারা দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে বাড়ি ফিরে গোসল করে শান্তি খোঁজেন। রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করাও অনেকের পছন্দের রুটিন। আর যারা দিনের বেলা বাড়িতে থাকেন, তারা হয়তো দুপুরেও গোসল সেরে নেন। তবে মূল প্রশ্ন হলো, সারাদিনে কতবার গোসল করা উচিত? এবং দিনের কোন সময়টি গোসলের জন্য সবচেয়ে ভালো?
দিনে কতবার গোসল করবেন?
গরমকালে বারবার গোসল করা সাময়িকভাবে আরাম দিলেও, এটি আসলে কোনো টেকসই সমাধান নয়। একাধিকবার গোসল করলে ত্বক তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে কিছু উপকারী জীবাণু থাকে। বারবার গোসল করার ফলে এই জীবাণুদের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, তাই দিনে একবার গোসল করাই যথেষ্ট।
এই বাস্তবতার বাইরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা দরকার, বিশ্বজুড়ে বিশুদ্ধ পানির সংকট ক্রমশ বাড়ছে। বারবার গোসল করে পানির অপচয় না করেও কিন্তু আপনি সতেজ থাকতে পারেন। এতে পরিবেশের প্রতিও আপনার পরোক্ষ অবদান থাকবে।
কোন সময় গোসল করবেন?
বাইরের রোদ ও ধুলাবালি থেকে ফিরে এসে গোসল করা জরুরি। তাই যারা দিনে একবার গোসল করতে চান, তারা এই সময়টিকে বেছে নিতে পারেন। যারা রাতে প্রশান্তির ঘুমের জন্য গোসল করেন, তারা রাতের বদলে দুপুর, বিকেল বা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে গোসল করতে পারেন। এই সময়ে গোসল করার পর তেমন ভারী কাজ না করলে, ঘুমাতে যাওয়ার সময় শরীর খুব একটা ঘামবে না বা গরমও হবে না।
যদি সারা দিন বাড়ির ভেতরেই থাকেন, তাহলে দুপুরের দিকে গোসল করা আপনার জন্য আরামদায়ক হতে পারে। বিশেষ করে যারা রান্নার কাজ করেন, তারা এই কাজ শেষ করে গোসল করলে ক্লান্তি দূর হবে।
কিছু জরুরি টিপস:
দুপুর বা বিকেলের দিকে রোদের তাপে বালতির পানি গরম হয়ে যেতে পারে। তাই সম্ভব হলে সকালের দিকেই বালতিতে পানি ভরে ভালোভাবে ঢেকে রাখুন। এতে গোসলের সময় ঠান্ডা পানি পাওয়া যাবে।
বাথটাব বা শাওয়ারে গোসল করলে অনেক বেশি পানি অপচয় হয়। বালতির পানিতে গোসল করলে পানির ব্যবহার অনেক সাশ্রয়ী হয়।
সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে বালতির পানিতে থাকা ময়লা নিচে осесть শুরু করে। তাই বালতির নিচের পানিটুকু ফেলে দিয়ে ওপরের পরিষ্কার পানি ব্যবহার করুন। নিচের ঘোলা পানিটুকু গাছের গোড়ায় দিতে পারেন।
অন্য সময়ে গোসল করার প্রয়োজন হলে:
অনেকের পক্ষেই সকাল বা রাতের গোসলের অভ্যাস পরিবর্তন করা কঠিন হতে পারে। তারা চাইলে তাদের অভ্যাসমতো সময়ে গোসল করতে পারেন, এতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। তবে বাইরে থেকে ফিরে এসে শুধু পোশাক পরিবর্তন করে হাত, পা ও মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিলেও অনেকটা সতেজ অনুভব করবেন।
মনে রাখবেন, রোদ বা ধুলাবালির কারণে ত্বকের যতটা ক্ষতি হয়, বাইরে যাওয়ার সময় হালকা সুতির ফুলহাতা পোশাক এবং পায়জামা বা প্যান্ট পরলে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমানো যায়। এছাড়াও, শরীরের যেসব অংশে বেশি ঘাম হয়, সেসব জায়গা ভেজা কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। দিনের বা রাতের যেকোনো সময়ই এভাবে হাত, মুখ, মাথা, বগল ও কুঁচকি ভিজিয়ে নিলে আরাম পাবেন। অতিরিক্ত গরমে চাইলে কাপড়ে কিছু বরফের কুচি পেঁচিয়ে বগলের নিচে দশ মিনিটের জন্য ধরে রাখতে পারেন, এতেও বেশ আরাম পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
সাব্বির