ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তিনটি খেজুরেই কমতে পারে কোলেস্টেরল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ১৭ মে ২০২৫

তিনটি খেজুরেই কমতে পারে কোলেস্টেরল

ছবি: সংগৃহীত

শুধু ডায়াবেটিস রোগীদেরই নয়, সকলেরই রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। কারণ অতিরিক্ত গ্লুকোজ রক্তনালিতে ক্ষতি করতে পারে, যা হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা চোখের জটিলতার মতো রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের (BHF) মতে, উচ্চ রক্তচিনি অনেক সময় উপসর্গহীন থাকে এবং সেটা শুধুমাত্র ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পরেই বোঝা যায়।

এমন অবস্থায় স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্যাভ্যাসযেমন মেডিটারেনিয়ান, নর্ডিক, ভেজেটেরিয়ান বা ভেগান ডায়েটঅনুসরণ করাই শ্রেয়। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, প্রতিদিন মাত্র তিনটি খেজুর খেলে শুধু রক্তে চিনির মাত্রাই নয় বরং কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে আসে।

২০২০ সালে ১০০ জন টাইপ- ডায়াবেটিস রোগীর ওপর গবেষণা চালানো হয়। তাদের দুটি দলে ভাগ করা হয়এক দলকে প্রতিদিন তিনটি করে খেজুর খাওয়ানো হয় ১৬ সপ্তাহ ধরে, অপর দলটি একেবারে খেজুর এড়িয়ে চলে।

ফলাফল বলছে, খেজুর খাওয়া দলটির রক্তে চিনির মাত্রায় কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। এর মূল কারণ খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। আরও চমকপ্রদ বিষয় হলো, খেজুর খাওয়া দলটির রক্তে মোট কোলেস্টেরল কমেছে এবংভালোকোলেস্টেরল (HDL) বেড়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

চিনির বিকল্প খেজুর 

বিখ্যাত ব্রিটিশ চিকিৎসক ডা. আমির খান নিজেই প্রতিদিন তিনটি খেজুর খান বলে জানিয়েছেন। তার মতে, “খেজুর ডায়াবেটিক রোগীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। বরং চিনির পরিবর্তে খেজুর ব্যবহার করলে উপকারই বেশি।

শুধু খেজুর না খেয়ে, বরং এটি সালাদ, ওটস, বাদাম বা চিনাবাদামের মাখনের সঙ্গে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।

খেজুরের অন্যান্য উপকারিতা

. গর্ভাবস্থায় সাহায্য করে:

গবেষণায় দেখা গেছে, শেষ কয়েক সপ্তাহে খেজুর খেলে স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা বাড়ে এবং প্রসবকালীন সময় কমে। এটিঅক্সিটোসিনহরমোনের মতো কাজ করতে পারে।

. প্রজননে সহায়ক:

একাধিক গবেষণা বলছে, খেজুর পুরুষদের হরমোন লেভেল, স্পার্মের গতি গুণগত মান উন্নত করতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রেও এটি ডিম্বাণুর স্বাস্থ্য উন্নত করে।

. হজমে সহায়ক:

খেজুরে থাকা ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং পেটের ইনফ্ল্যামেশন প্রতিরোধে কাজ করে।

. অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর:

খেজুরে রয়েছে পলিফেনল, ক্যারোটিনয়েড লিগনান্স নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, যা দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

কতখানি খাওয়া নিরাপদ?

প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি খেজুর খাওয়া নিরাপদ। ডায়াবেটিকদের জন্য সাধারণত এক থেকে দুইটি খেজুর খাওয়া যুক্তিযুক্ত, তবে তা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে প্রক্রিয়াজাত খেজুরজাত পণ্য এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

খেজুর ছোট হলেও এর গুণ অসাধারণ। এটি প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি এবং উপকারীরক্ত চিনি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে, হজমে সাহায্য করে এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। স্বাস্থ্যসচেতন প্রতিটি মানুষের খাদ্যতালিকায় এই উপকারী ফলটি অবশ্যই জায়গা করে নেওয়ার দাবি রাখে।

মুমু

×