ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

নানা আয়োজনে পালিত হলো দিবস

স্থূলতা শিশুদের ডায়াবেটিসের বড় ঝুঁকি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৪৪, ১৫ নভেম্বর ২০২২

স্থূলতা শিশুদের ডায়াবেটিসের বড় ঝুঁকি

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে ফ্রি ক্যাম্পেনে সাধারণ মানুষের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হচ্ছে

দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বয়স্করা তো আছেই- সম্প্রতি লক্ষণীয়ভাবে বাড়ছে তরুণ এবং শিশুদের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা। এক পরিসংখ্যান বলছে, দেশে বর্তমানে ১ কোটি ৩০ লাখ ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছে। আর বেশিরভাগেরই আক্রান্তের অন্যতম কারণ জাংক ফুড এবং কায়িক শ্রমে অনীহা। বিশেষ করে স্থূলতার কারণে শিশু বয়সেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। এমন অবস্থায় সচেতনতাই পারে এর থেকে মুক্তি দিতে।

সোমবার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, স্থূলতা রোধ, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধে আরো জ্ঞান বিনিময় করা জরুরি। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বারডেম মা ও শিশু হাসপাতালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বর্তমান সময়ে অধিকাংশ শিশুই স্থূলতায় ভুগছে, এটি তাদের ডায়াবেটিসের জন্য বড় ঝুঁকি। তবে যারা ইতোমধ্যেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে, নিয়মিত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন তাদের জীবন বাঁচাতে পারে।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে; যা ২০৪৫ সালের মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২ লাখ হবে। এটি আমাদের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক ব্যাপার। তবে, আরও ভয়াবহ বিষয় হলো ডায়াবেটিস আক্রান্তদের বেশিরভাগই জানে না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে, যা দিনে দিনে তাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি। নিজের সুরক্ষায় ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানুন। আমরা যদি ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে এটাকে প্রতিরোধ করতে পারব।
শিশুদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তাদের একটি স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন উপহার দেয়ার জন্য কাজ করছে ডেনমার্ক ভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নভো নরডিক্স। ফলে বিনামূল্যে ইনসুলিনের পাশাপাশি, প্রতি মাসে পরামর্শ, এইচবিএওয়ান সি পরীক্ষা, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা, সিরিঞ্জ, স্ট্রাইপসহ গ্লুকোমিটার, শিশুদের ডায়াবেটিস ক্যাম্প, সরাসরি চিকিৎসক ও টেলিমেডিসিন সেবা পাচ্ছে শিশুরা।

অনুষ্ঠানে নভো নরডিস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড জেনারেল ম্যানেজার রাজর্শী দে সরকার বলেন, নিত্যনতুন উদ্ভাবন ও মানসম্পন্ন ওষুধ নিয়ে আসার মাধ্যমে বাংলাদেশে মানুষের ডায়াবেটিস চিকিৎসায় পরিবর্তন আনতে নভো নরডিস্ক প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির তথ্যমতে, দেশের প্রতি ২ জনে ১ জন জানেন না তাদের ডায়াবেটিস আছে।
ইবিতে আলোচনা সভা ॥ ইবি সংবাদদাতা জানান, প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন প্রফেসর ডা. এস আর খান বলেন, প্রতি দুজনে একজন জানেনই না তাদের ডায়াবেটিস আছে। বিশ্বে এই রোগটির জন্য ৭৬০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, যা দিয়ে ২৫টি পদ্মা সেতু তৈরি করা সম্ভব। এ সময় ডায়াবেটিস প্রতিরোধে খাদ্য গ্রহণে সতর্কতা, নিয়মিত হাঁটা, শারীরিক পরিশ্রম করা এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকার পরামর্শ দেন তিনি।