
ছবি: জনকণ্ঠ
প্রকৃতিতে বিস্ময়ের শেষ নেই। তেমনই এক অদ্ভুত গাছের নাম লজ্জাবতী। কেউ হাত ছোঁয়ালেই তার পাতাগুলো মুহূর্তেই চুপসে যায়, যেন লজ্জায় মুখ লুকাচ্ছে। এই গাছটি একদিকে যেমন বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু, অন্যদিকে তেমনি এটি গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে পরিচিত।
বৈজ্ঞানিক নাম Mimosa pudica। স্থানীয়ভাবে অনেকে একে লজ্জার ফুল বা লাজুক গাছ বলেও ডাকেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গাছের ভেতরে থাকা কোষে পানি ও আয়নের ঘনত্ব স্পর্শ পেলে দ্রুত পরিবর্তিত হয়। ফলে পাতাগুলি সংকুচিত হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রতিক্রিয়াকে বলা হয় থিগমোন্যাস্টি (Thigmonasty)। কিছু সময় পর আবার তা আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেই এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। তবে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে বেশি জন্মে। রাস্তার ধারে, পতিত জমিতে কিংবা ধানক্ষেতের পাশে এই গাছের দেখা মেলে।
ঔষধি গুণেও অনন্য এই গাছটি। গ্রামবাংলায় এখনো অনেকে এটি ব্যবহার করেন নানান রোগের চিকিৎসায়।
– পাতার পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগালে রক্তপাত বন্ধ হয়।
– পাতা শুকিয়ে চা হিসেবে পান করলে অনিদ্রা দূর হয়।
– পেটের গন্ডগোল, আমাশয় ও বিষাক্ত পোকার কামড়েও কার্যকর।
এছাড়াও গবেষকরা বলছেন, গাছটির ব্যবহার সম্ভাবনা রয়েছে প্রাকৃতিক ব্যথানাশক ও প্রদাহ নিরাময়ে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এই গাছ ব্যবহৃত হয় উদ্ভিদে স্পর্শ প্রতিক্রিয়ার উদাহরণ হিসেবে।
প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এই গাছ এখন অনেকেই নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনায়ও লাগাচ্ছেন শুধুমাত্র কৌতূহলের বশে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ওষুধি গুণ নিয়ম মেনে ব্যবহার না করলে হতে পারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
প্রকৃতির এই লাজুক অথচ শক্তিশালী উপহারকে রক্ষা ও সংরক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছেন পরিবেশকর্মীরাও।
শিহাব