ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১

অসময়ে কাপ্তাই লেক শামুকভাঙ্গা পাখির কোলাহলে মুখরিত 

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি 

প্রকাশিত: ১৭:৪২, ৩০ এপ্রিল ২০২৩

অসময়ে কাপ্তাই লেক শামুকভাঙ্গা পাখির কোলাহলে মুখরিত 

ছবিতে শামুখভাঙ্গা পাখি উড়তে দেখা যাচ্ছে 

অসময়ে কাপ্তাই লেকে ঝাঁকে ঝাঁকে শামুকভাঙ্গা পাকির কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে কাপ্তাই লেকের তীর অঞ্চল। আকারে পাখিগুলো অনেক বড়  হলেও এই গুলো অত্যান্ত শান্ত প্রকৃতির। অনেকেই এই পাখিকে শামুকখেকো পাখিও বলে থাকে। 

এই সব পাখি কাপ্তাই লেকে শীতকালে আগমন করলেও এবার প্রচন্ড খরার সময় এদের দেখা যাচ্ছে। মূলত খাদ্যের সন্ধ্যানে অন্য এলাকা থেকে এরা দল বেধেঁ কাপ্তাই লেকে এসেছে। বলে পাখি প্রেমিকদের ধারণা। 

এই পাখির শরীরের মাপ ৯৯ সেন্টিমিটার। মাটিতে দাঁড়ানো অবস্থায় এর উচ্চতা শরীরের মাপের সমান। বকের মত বড়সড় এ পাখিটির ঠোট এর মধ্যে নিরীহ ভাব আছে। মাথার চাঁদি থেকে ঘাড়-গলা-বুক-পেট হয়ে লেজের তলা পর্যন্ত সাদা। লেজের তলা ও উপরের কিছুটা অংশ আবার কালো। ডানা মেলা অবস্থায়  দেখতে অধিকাংশ সাদা, শুধু প্রান্তদেশ কালো। ঋতুভেদে আবার এদের শরীরের রং কিছুটা পরিবর্তন হয়ে থাকে।   

শামুকভাঙ্গা মূলত এক ধরনের পাখি। এরা জলাশয় চলাফেরা করে, এদের খাদ্য তালিকায় আছে মাছ, কাঁকড়া, শামুক ,শামুকের ডিম, কচ্ছপের ছোট ছানা। শক্ত ঠোঁট দিয়ে এরা শামুক ভেঙে খেতে পারে। ঝাঁক বেঁধে যখন এরা খাবার সংগ্রহ করে তখন দেখতে ভারি সুন্দর লাগে।  

প্রতিবছর রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেকে বিভিন্ন স্থানে এদের দেখা যায়, এরা বাসা বাঁধে ভাদ্র মাসে। জ্যৈষ্ঠ মাসেও বাসা করতে দেখা যায়। দুজনে মিলে বাসা সাজায়। পুরুষ পাখিটি উপকরণে বেশি আনে। বাসা বাঁধতে সময় লাগে ৭-৯ দিন। ডিম পাড়ে দুই থেকে চারটি। 

ডিমের রং ঘোলাটে সাদা। ৩০-৩৩ দিনে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে। বাচ্চারা উড়তে শেখে ৫০-৬০ দিনে।  বড় আকারের এ পাখিটি দল বেধেঁ থাকে সব সময়। দলনেতা দল চালায়। শামুকভাঙ্গা বাংলাদেশে এখন বেশ দেখা যায়। তবে সংখ্যায় কম। হাওরাঞ্চলে বিচরণ বেশি। খাবার বা বাসা করার মতো গাছেরও অভাব নেই।

একটি সূত্রে জানাগেছে,বর্তমানে শামুকভাঙ্গা পাখি দেশে নেই বললেই চলে,মাত্রাতিরিক্ত শিকারের কারণে এদের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। মানুষের সচেতনতায় বর্তমানে সংখ্যা বাড়লেও এখনও শিকার চলছে। এ ছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হল এদের খাদ্যাভাব বা খাবারের সংকটে লোকালয়ে চলে আসালে শিকারির হাতে ধরা পড়ে। 

এমএস

×