ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

শিল্পীর সঙ্গে এ কেমন আচরন, নিরব সাংস্কৃতিক অঙ্গন

প্রকাশিত: ১৭:৪২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

শিল্পীর সঙ্গে এ কেমন আচরন, নিরব সাংস্কৃতিক অঙ্গন

দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জে কে মজলিশকে

বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন আরটিভির মামলায় গ্রেফতার করা হয় সংগীতশিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক জাকের খান মজলিশকে (জে কে মজলিশ)। তার হাতকড়া পরানো একটি ছবি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা যায়, গ্রেফতারের পরপর আদালতে জে কে মজলিশের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে জে কে মজলিশের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী।

পরে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে আসামিকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জেলগেটে দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।  

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ এ আদেশ দেন।

এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং এলাকার ৬ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে জে কে মজলিশকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিসিটি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ইশতিয়াক আহমেদ এবং ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি গোয়েন্দা দল তাকে গ্রেফতার করে।

জে কে মজলিশকে হাতকড়া পরিয়ে, দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়ার একটি ছবি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।  এই ছবিটি পোস্ট করে শিল্পীর সঙ্গে এমন আচরণ মানতে পারছেন না শোবিজের মানুষরা। ছবিটি গ্রেফতারের সময়ের নাকি আদালতে তোলার, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  

গায়ক মেহেদী সোহেল ছবিটি শেয়ার করে লেখেন, ছবিটি দেখে চুপ থাকতে পারলাম না। জে কে মজলিশ কি কোন দাগী আসামী? একজন শিল্পীর হাতে এভাবে হাতকড়াটা না পরালেই কি হতো না? হায়রে মিডিয়া...এ জন্যই এই জগতের ওপর মনটা উঠে গেছে।

মাইম অভিনেতা ও সাংবাদিক নিথর মাহবুব ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, জে কে মজলিশ দেশের সংগীত অঙ্গনের একটি পরিচিত নাম। মামলা হয়েছে বলেই তাকে এভাবে হাতকড়া পরিয়ে তাতে রশি লাগিয়ে টেনে নেওয়া খুব অন্যায়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই জে কে মজলিসের সঙ্গে পুলিশের এমন আচরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।  

গীতিকার জাহিদ আকবর লেখেন, এই সুরকার সংগীত পরিচালককে ব্যক্তিগতভাবে আমি চিনি না। কিন্তু তাকে চোর-ডাকাতের মতো হাতে দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই অপমান চোখে বড় লাগছে। তিনি অপরাধ করলে সংগীতের এত এত সংগঠনের কাজ কী? একটা মীমাংসা করা যেত না। আরটিভি কিভাবে এমন কাজ করতে পারে। খুঁজে দেখলাম, একসময় তাদের হয়ে গান করেছেন এই ব্যক্তি। আসল ঘটনা বের হয়ে আসুক। কোনো শিল্পী, সুরকার যন্ত্রশিল্পীকে দেখলাম না বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে। এই আমাদের সংগীত!  

মামলার অভিযোগে জানা গেছে,  জে কে মজলিশ অর্থের বিনিময়ে পুরনো জনপ্রিয় লোকসংগীতগুলোর মিউজিক রি-অ্যারেঞ্জ করলেও তিন বছর পর আরটিভি ‘ফোক স্টেশন’র প্রায় আড়াই শ গানের স্বত্ব তার নিজের বলে দাবি করে অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ ও প্রচার করছেন। সরাসরি বাংলাদেশ থেকে বেআইনিভাবে সহযোগিতা করেছে ‘গানবক্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান; যারা বিভিন্ন ধরনের গান শিল্পী ও কম্পোজারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বিদেশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচার করে থাকে।  

অন্যান্য কম্পোজারের সঙ্গে মিলে আরটিভির ‘ফোক স্টেশন’ অনুষ্ঠানের গানগুলোর মিউজিক রি-অ্যারেঞ্জ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সুরকার ও সংগীত পরিচালক হিসেবে পরিচিত জে কে মজলিশকে। কিন্তু গানগুলোর স্বত্ব নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে আরটিভি।

 

এমএস

×