ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

দুই দশকে শশী

আনন্দকণ্ঠ ফিচার

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ৯ জুলাই ২০২৫

দুই দশকে শশী

শারমীন জোহা শশী

‘হাজার বছর ধরে’ সিনেমায় শশী ও রিয়াজজনপ্রিয় অভিনেত্রী শারমীন জোহা শশী। একটি মাত্র সিনোতে অভিনয় করেই এখনো সিনেমাপ্রেমীদের মনে দাগ কেটে আছেন। এর মধ্যে তার অভিনীত ‘হাজার বছর ধরে’ সিনেমার দুই দশক হলো। জহির রায়হানের কালজয়ী উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’ অবলম্বনে একই শিরোনামে এ সিনেমা নির্মাণ করেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী কোহিনূর আখতার সুচন্দা। সে সময় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে এটি বেশ প্রশংসা কুড়ায়। এ সিনেমার ‘তুমি সুঁতোই বেঁধেছ শাপলার ফুল’ গানটি আজও শ্রোতাদের মুখে শোনা যায়।
২০০৫ সালের ৬ জুলাই ‘হাজার বছর ধরে’ সিনেমা মুক্তি পায় দেশের প্রেক্ষাগৃহে। গত ৬ জুন সিনেমাটি মুক্তির দুই দশক হলো। এ সিনেমাতে অভিষেক হয় নতুন মুখ শশীর।
এ সিনেমায় ‘টুনি’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান তিনি। অভিনয়ে সাবলীলতা, সংযত সৌন্দর্য ও চোখে পড়ার মতো পরিণত উপস্থিতি দর্শক ও সমালোচক উভয়ের নজর কাড়েন এ গ্ল্যামারকন্যা। তবে এই এক সিনেমার পর আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি তাকে।
শশী বলেন, ‘আমি প্রথম সিনেমার পর আরও অনেক সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করার মতো চরিত্র আমার কাছে আসেনি। দর্শক টুনিকে যেভাবে ভালোবাসেছে তার প্রতিদান দেওয়ার জন্যই যেমন তেমন চরিত্রে কাজ করার আগ্রহ হয়নি।’
দুই দশক পর টুনি কেমন আছে? শশীর ভাষ্য, ‘আমি সবার ভালোবাসায় ভালোই আছি। তবে কবে চলে গেল দিনগুলো, কোথায় গেল বুঝতেই পারিনি!! আমি বেঁচে আছি সাথে আমার অ্যাচিভমেন্টটুকু, বোনাস হিসেবে এটা দেখা ২০ বছর উপলক্ষে কেউ কিছু লিখেছে আমার জন্য!! আর কি লাগে এক জীবনে। সত্যি বলতে, আরও অনেক চরিত্র করা বাকি, যা যা আমার মনে এসে উঁকি ঝুঁকি দিয়ে যায় মাঝে মাঝে, সেই সব চরিত্র। হঠাৎ দেখা হয়ে যেতে পারে অন্য কোনো চরিত্রে দশকের মাঝে।’
প্রথম সিনেমার পর টিভি নাটকেই ব্যস্ত হয়ে ওঠেন শশী। ২০০৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছিল তার সবচেয়ে ব্যস্ত সময় টেলিভিশনে। ‘অস্তিত্বে আমার দেশ’, ‘গুলশান এভিনিউ’, ‘ঘর কুটুম’, ‘তোলপাড়’, ‘একজন পরশী এবং অতঃপর’,  ‘নোনা বালির তীর’, ‘নেকলেস’, ‘তুমি আমি মুহূর্ত’, ‘কুসুম কথা’ সহ একাধিক জনপ্রিয় নাটক ও টেলিফিল্মে প্রধান চরিত্রে দেখা গেছে শশীকে। তবে এখন আগের চেয়ে ছোটপর্দায় কম কাজ করছেন জানান তিনি। ওটিটি যুগে এসেও পিছিয়ে নেই শশী। ২০১৯ সালে হইচই প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায় ‘ঢাকা মেট্র’ নামের ওয়েব সিরিজ। এতে তিনি অভিনয় করেন। শুধু পর্দায় নয়, কণ্ঠ দিয়েও সমানভাবে মুগ্ধ করে চলেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় কোরিয়ান সিরিজ ‘রিপ্লাই ১৯৮৮’ ও উবংপবহফধহঃং ড়ভ ঃযব ঝঁহ-এর বাংলা ডাবিংয়ে কণ্ঠ দেন শশী। এই কাজগুলোতে তার পারফরম্যান্স ব্যাপক প্রশংসিত হয় বিভিন্ন শ্রেণির দর্শকের মধ্যে। গ্রামীণফোনসহ একাধিক বিজ্ঞাপনচিত্রেও দেখা গেছে তাকে।এই দীর্ঘ পথচলায় শারমিন জোহা শশীর সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি ছিলেন আত্মপ্রচারবিমুখ এক অভিনয়শিল্পী। যখন অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়াকে অভিনয়ের বাইরে নিজেদের অবস্থান জানানোর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেছে নেন, শশী বরাবরই থেকেছেন নীরব, অভিনয়নির্ভর। নিজের কাজকে রেখেছেন কেবল কাজের ভেতরেই। এমনই এক নীরব সাফল্যের উদাহরণ হয়ে আছে ‘দাগ’। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি ৭০তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের শর্ট ফিল্ম কর্নারে প্রদর্শিত হয়। পরে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান শর্ট ইন্টারন্যাশনাল চলচ্চিত্রটি পরিবেশন করে মার্কিন ও ইউরোপীয় বাজারে। টেলিভিশন ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে শশী বলেন, ‘টেলিবিশনেও এখন কাম কাজ করছি। কারণ এখন যে ধরনের গল্পে কাজ হচ্ছে তার বেশির ভাগ গল্পেই আমাকে যায় না। তাই গল্প ও চরিত্র পছন্দ হলে কাজ করছি।’ 

প্যানেল/মো.

×