ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আফজালে মুগ্ধ দুই অভিনেত্রী

আনন্দকণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:২৩, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

আফজালে মুগ্ধ দুই অভিনেত্রী

রোকেয়ো প্রাচী ও মৌসুমী হামদি

টিভি নাটকের স্বর্ণযুগের প্রধানতম নায়ক আফজাল হোসেন। কথাটি তিনি নিজেও স্বীকার করেন, একটু অন্যভাবে। বলেন, ‘এটা আমার সৌভাগ্য টিভি নাটকের স্বর্ণযুগটা পেয়েছি।’ তবে বিশ্লেষকদের অভিমত, আফজাল হোসেন যে মাপের অভিনেতা, ঠিক সে মাপে পরবর্তী সময়ে তাকে পাওয়া যায়নি। কারণ, মাঝে দীর্ঘ বিরতিতে ছিলেন এই অভিনেতা। এরপরেও কোনো প্রজন্মের নায়িকাদের কাছে তার মুগ্ধতা কাটেনি।

সাম্প্রতিক সময়ে আফজাল হোসেনকে ফের পাওয়া যাচ্ছে নিয়মিত। বিশেষ করে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তিনি রীতিমতো চমকে দিচ্ছেন নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে। সেই সূত্রে এবার তাকে পাওয়া যাবে দেশ ভাগের সিনেমা ‘যাপিত জীবন’-এ। ’৪৭-এর দেশভাগ ও ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ঘিরে সরকারি অনুদানে নির্মিত হচ্ছে এ সিনেমাটি। এটি পরিচালনা করছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব। সেলিনা হোসেনের উপন্যাস থেকে এর চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে অনিমেষ আইচ ও ইমতিয়াজ হৃদয়।

আফজাল হোসেন এতে অভিনয় করছেন সোবহান চরিত্রে। অভিনেতা জানান, ‘যাপিত জীবন’-এ দেখানো হবে দেশভাগের সময় একটি পরিবারের ভারত থেকে এখানে (পূর্ব পাকিস্তান) পালিয়ে আসার গল্প। যে গল্পটা ভাষা আন্দোলন পর্যন্ত পৌঁছাবে। গত ২২ নভেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে রাজবাড়ীর বিভিন্ন লোকেশনে সিনেমাটির প্রথম ধাপের শূটিং শুরু হয়েছে। ২৮ নভেম্বর থেকে শূটিংয়ে অংশ নিয়েছেন অভিনেতা। এ সিনেমাতে তার সঙ্গে প্রথমবার দুই প্রজন্মের দুই অভিনেত্রী পর্দা ভাগ করছেন।

এরমধ্যে একজন রোকেয়া প্রাচী অন্যজন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। সিনেমাটিতে আফজাল হোসেনের-স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন প্রাচী। অভিনেত্রী বলেন, প্রথমবার আফজাল ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করছি। তিনি আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন অভিনেতা। ছোটবেলা থেকেই তার কাজ পছন্দ করি। অবশেষে একসঙ্গে কাজ হচ্ছে। তার সঙ্গে কাজ করতে পেরে অন্যরকম ভালো লাগছে। এটি আমার জন্য খুব বড় অভিজ্ঞতা। হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় কাজ হলেও তার সঙ্গে কাজের বোঝাপড়া অসাধারণ। এই সিনেমায় সব গুণী শিল্পীরা রয়েছেন। সব মিলিয়ে অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

এদিকে শুধু মৌসুমী হামিদেরই নন, তার মা-বাবার পছন্দের অভিনয়শিল্পী আফজাল হোসেন। তারা টেলিভিশনে আফজাল হোসেনকে দেখলেই কিশোরী মেয়ে মৌসুমী হামিদকে বলতেন, ‘আমাদের সাতক্ষীরার গুণী অভিনেতা তিনি, দেশের গর্ব।’ এভাবে শৈশব থেকে আফজাল হোসেনের সঙ্গে প্রথম পরিচয় চলতি সময়ের এ অভিনেত্রীর। একটু বড় হওয়ার পর মৌসুমী নিজেও অভিনেতা আফজাল হোসেনের অভিনয়ের প্রেমে পড়েন।

শোবিজে আসার পর থেকে ইচ্ছা ছিল আফজাল হোসেনের সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করবেন তিনি। কিন্তু এ জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে এক যুগ। অবশেষে ‘যাপিত জীবন’ সিনেমা সেই সুযোগ করে দিল। তবে সিনেমার কোন চরিত্রে অভিনয় করছেন, তা এখনো বলতে চান না মৌসুমী। তিনি জানালেন, ‘সময়টাই আমাদের গল্পের নায়ক। এখানে চরিত্রের চেয়ে মানবিক যে প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে, সেটা আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। যে কারণে সিনেমাটি করছি।’

আফজাল হোসেন প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘আফজাল হোসেন ভাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছা অনেক দিনের। কিন্তু কোনোভাবেই সুযোগ হচ্ছিল না। এ জন্য আমাকে ১২-১৩ বছর অপেক্ষা করতে হলো। তিনি যেমন ভালো অভিনেতা, তেমনি ভালো একজন মানুষ। অভিনয় নিয়ে তার কাছ থেকে নতুন অনেক কিছু শিখছি। একজন গুণী অভিনেতার সান্নিধ্যে থাকলে প্রতি মুহূর্তে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা কিছু শেখার থাকে।

এমন সুযোগ আমার জন্য অনেক বড় সৌভাগ্যের।’ ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘যাপিত জীবন’ সিনেমার প্রথম ধাপের শূটিং হয়। কয়েক দিন বিরতি নিয়ে দ্বিতীয় ধাপের শূটিং হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ তার আশপাশের এলাকায়। ডিসেম্বরের মধ্যে সিনেমার পুরো কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা। নতুন বছরের মাঝামাঝি সময় ভালো একটি দিন থেকে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার।

×