ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঐন্দ্রিলা চোখের জলে বিদায়

আনন্দকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৩০, ২৩ নভেম্বর ২০২২; আপডেট: ১১:৫৩, ২৪ নভেম্বর ২০২২

ঐন্দ্রিলা চোখের জলে বিদায়

ঐন্দ্রিলা শর্মা

পশ্চিমবঙ্গের ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। প্রতিশ্রুতিময়ী তরুণী এই অভিনেত্রীর উল্লেখযোগ্য টিভি সিরিয়াল ‘ঝুমুর’, ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’, ‘জীবন জ্যোতি’, ‘জীবন কথা’, ‘জিয়নকাঠি’ ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে এ বছর ‘অসাধারণ প্রত্যাবর্তন’ বিভাগে টেলি সম্মান অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে। ছোট পর্দার জনপ্রিয় শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এর মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন তিনি। তার ক্যান্সার জয়ের গল্প অনুপ্রাণিত করেছিল ভক্তদের। এরপর জি-বাংলা অরিজিনালের ছবি ‘ভোলে বাবা পার করেগা’-তে দেখা গিয়েছিল তাকে। ‘ভাগাড়’ ওয়েব সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

গেল রবিবার দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। মাত্র ২৪টি বসন্ত পেরিয়েছিলেন অভিনেত্রী। গত ১ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ভর্তি করানো হয় হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে তার। কোমায় চলে যান তিনি। রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। আর ফিরল না জ্ঞান। হাসপাতালেই প্রয়াত হলেন অভিনেত্রী। ১ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তির পর দিন যত এগিয়েছে ততই কঠিন হয়েছে তার লড়াই। গত ১৪ নভেম্বর থেকে ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

হৃদ্যন্ত্র স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছিল বার বার। শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে দশবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এই ধাক্কা আর সামলাতে পারলেন না তিনি। অতীতে দু’বার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েও চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। ২০১৫ সালে, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রথমবার ক্যান্সার ধরা পড়ে তার। কর্কট রোগের আক্রমণ হয়েছিল তার অস্থিমজ্জায়। দ্বিতীয় বার ২০২১ সালে। সে বার ফুসফুসে টিউমার। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গেই চলছিল তার অভিনয়ের কাজ।

তরুণ অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবরে সোশ্যালমিডিয়া হয়ে উঠেছিল ঐন্দ্রিলময়। এত কম বয়সে ঐন্দ্রিলার এই মৃত্যু যেন নাড়িয়ে দিয়েছে টালিগঞ্জের স্টুডিয়োপাড়াকে। প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা থেকে জয়া আহসান, শভা তার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন। ঐন্দ্রিলার এই স্বল্প দৈর্ঘ্যরে জীবনের শেষ সময়টুকুতে তার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। তার সঙ্গে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সম্পর্কে ছিলেন তিনি। মারণরোগের সঙ্গে লড়াইয়ে বান্ধবীকে কখনো একা ছাড়েননি তিনি। তারা যেন হয়ে উঠেছিলেন একে অপরের জীবনের জিয়নকাঠি।

ঐন্দ্রিলার শরীরে আরও একবার যখন ক্যান্সার থাবা বসিয়েছিল তখন সেই লড়াইয়ে শুরু থেকে ছিলেন সব্যসাচী। এমনকি, কেমোথেরাপির জন্য যখন ঐন্দ্রিলার চুল কেটে ফেলতে হয়, মাথা কামিয়েছিলেন সব্যসাচীও। ২০১৭ সালে ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকের সেটে ঐন্দ্রিলার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল সব্যসাচীর। সেখান থেকেই প্রেম। ২০১৭ থেকে ২০২২ রূপকথার মেয়াদ ৫ বছর। হাত ছাড়লেন ঐন্দ্রিলা। যাকে সবচেয়ে বেশি আঁকড়ে ধরেছিলেন, তিনিই সব্যসাচীকে ছেড়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। প্রেমিকাকে ধরে রাখতে পারলেন না পর্দার ‘বামাক্ষ্যাপা’। না, অলৌকিক কাজ করল না।

×