
রামেন্দু মজুমদার
‘পোহালে শর্বরী’ নাটকের সম সাময়িক প্রাসঙ্গিকতা কি ?
রামেন্দু মজুমদার ॥ প্রাচীনকাল থেকে, বলা যায় মহাভারতের যুগ থেকে নারীর যে অবস্থান বা নিজস্ব মত, তার তেমন কোন মূল্য দেয়া হয়নি। এখনও আমরা দেখছি যে নারীর মতামতকে মূল্য দেয়া হয় না। দ্বিতীয়ত আমরা সবাই (নারী-পুরুষ) সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক বিধি-নিষেধ ও একটা যান্ত্রিকতার মধ্যে আবদ্ধ হয়ে আছি। যার কারণে মানবিক মূল্যবোধ বা ব্যক্তিগত যে চাওয়া-পাওয়া তা প্রকাশ হতে পারছে না। এসব দিকটাও ‘পোহালে শর্বরী’ নাটকে আছে। সব মিলিয়ে আমি মনেকরি এ নাটকে সমসাময়িকতা আছে।
এ নাটক নির্দেশনায় আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি ?
রামেন্দু মজুমদার ॥ আমরা স্থান ও কালকে চিরায়ত একটা জায়গায় নেয়ার চেষ্টা করেছি। খুব একটা ওই প্রিয়ডই ধরে রাখতে হবে এমনটা নয়। একটা সার্বজনীন জায়গায় আনার চেষ্টা রয়েছে। বলা যায় সরলভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। আমাদের সেট, পোশাক, লাইট এসবের মধ্যে যাকজমক কিছু নেই। সারল্যের সঙ্গে রয়েছে আমাদের উপস্থাপনা। আমরা জোরটা দিয়েছি অভিনয়ের ওপর।
যেখানে পূর্ণাঙ্গ নাটক নির্মাণে দলীয় কর্মী সঙ্কট, সেখানে দুটি টিম নিয়ে মঞ্চায়নের ভাবনা কিভাবে এলো ?
রামেন্দু মজুমদার ॥ আমরা অনেকদিন পর নতুন নাটক মঞ্চে আনলামতো। আমদের বেশিরভাগ সদস্যের তো অভিনয়ের আকাক্সক্ষা আছে। চেয়েছি বেশিরভাগ সদস্য যেন অভিনয়ের সুযোগ পায়। দ্বিতীয়ত কারও ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য যেন কোন প্রদর্শনী আটকে না যায়। সে কারণেই আমরা প্রত্যেক চরিত্রের জন্য দুজন করে তৈরি করেছি। আমাদের সময় লেগেছে অনেক। এতে দ্বিগুণ সময় লেগেছে। পরিশ্রম হয়েছে অনেক। কিছুটা দুটি নাটক তৈরি করার মতো। এতে করে একটা লাভ হয়েছে যে দুটো দল তৈরি হয়েছে।
ত্রপা মজুমদার সংযুক্ত নির্দেশক, নির্মাণে তার সঙ্গে বোঝাপড়া কেমন ?
রামেন্দু মজুমদার ॥ এ নাটকে আমার ভাবনাটা বলেছি কিন্তু ডিটেইল ওয়ার্কটা করেছে ত্রপা। প্রত্যেকটা শিল্পীকে ধরে ধরে অভিনয় দেখানো বেশিরভাগ ত্রপাই করেছে। ওর কারণে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে ও সাবলিলভাবে আমার পক্ষে কাজটা করা সহজ হয়েছে।
নাটকে ফেরদৌসী মজুমদার কস্টিউম ডিজাইনার, অভিনয়ে নেই এ বিষয় নিয়ে বলুন ?
রামেন্দু মজুমদার ॥ নাটকে চরিত্র বিন্যাসে বয়স এবং স্থান, কাল বিবেচনায় সে রকম চরিত্র না থাকায় অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার অভিনয় করতে পারেননি। তবে এ নাটকের সব চরিত্রের প্রতি তার যে মমতা, অভিজ্ঞতার আলোকে সে সবই উজাড় করে দিয়েছেন যথোপযুক্ত কস্টিউম ডিজাইনের মধ্যদিয়ে। এগুলো একাধারে যেমন চরিত্র উপযোগী, তেমন নান্দনিক। ফলে ফেরদৌসী মজুমদার চরিত্রের অভিনয়ে রূপ দান না করলেও পোশাক নির্মাণের মধ্যদিয়ে একঅর্থে চরিত্রের সঙ্গে থাকলেন।
করোনাপরবর্তী এত উদ্দীপনা নিয়ে এ নাটক কেমন আশা করেন ?
রামেন্দু মজুমদার ॥ জীবন বাস্তবতায় সঙ্কট থাকে কিন্তু শিল্পের মানুষ তার সম্ভাবনার কথা ভেবে আশাকে জিইয়ে রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় করোনা পরবর্তী আমরা পুরাতন নাটক নিয়মিত মঞ্চায়নের সমান্তরাল নতুন নাটক নির্মাণের মধ্যদিয়ে পথ চলছি। ফলে এই নাটকের যা কিছু ভাল দর্শক সেটা গ্রহণ করবে এবং আমাদের সঙ্গে থাকবে এতটুকুই আমাদের প্রাপ্তি।