ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

মনোবৈকল্যের গল্পময় নিশিকাব্য নাটকের মঞ্চায়ন

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ১৭ নভেম্বর ২০২২

মনোবৈকল্যের গল্পময় নিশিকাব্য নাটকের মঞ্চায়ন

মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ নিশিকাব্য নাটকের দৃশ্য

কখনোবা জীবন থেকে হারিয়ে যায় স্বাভাবিকতা। সেই জীবনে লুপ্ত হয় স্বাভাবিক মানসিকতা। মনোবৈকল্যের গল্পময় তেমনই এক নাটক নিশিকাব্য। নাট্যদল ব নাটুয়া প্রযোজিত প্রযোজনাটির চতুর্থ প্রদর্শনী হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে। আজ শুক্রবার একই মঞ্চে নাটকটির পঞ্চম মঞ্চায়ন হবে। মুহম্মদ জাফর ইকবালের ছোটগল্প ‘মধ্যরাত্রিতে তিনজন দুর্ভাগা তরুণ’ অবলম্বনে নাটকটি লিখেছেন মঈন উদ্দিন পাঠান। নির্দেশনা দিয়েছেন আবদুল মমিন।

প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক আব্দুল মমিন বলেন, সমাজের উঁচুতলার মানুষের বিচিত্র রকমের ভোগ বিলাসের শিকার হয় প্রান্তিক মানুষ। নিশিকাব্য নাটকে তেমনই এক চরিত্র আবুল। একজন সাইকোপ্যাথের মনোবৈকল্যের শিকার হয় সে। এই আবুল আমাদের সমাজেরই চরিত্র। কখনো সে শিশু শ্রমিক, কখনো গৃহকর্মী, কখনোবা ধর্ষিতা শিশু। সমাজের এসব অসঙ্গতির চিত্র মেলে ধরা হয়েছে নিশিকাব্য নাটকে। মূলত মনোবৈকল্যের গল্পকে উপজীব্য করে এগিয়েছে নাটকের কাহিনী।
নাটকের গল্পে নিশিকাব্য লিখতে বসেন একজন সাইকোপ্যাথ। যার জীবনে দিন বলে কিছু নেই। অর্থাৎ ঘুমের ঘোরেই কেটে যায় তার সারাদিন। দিনের শেষে পড়ে থাকে রাত। তেমনই এক পার্কের আলো-আঁধারিতে নিশিকাব্য লিখতে বসেন ওই সাইকোপ্যাথ। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সাইকোপ্যাথের সঙ্গী হয় একজন বেকার এবং একজন প্রেমিক। বেকার যে কিনা ট্রেন মিস করে রাতটা কাটানোর জন্য পার্কে এসেছিল।

আর প্রেমিকা অন্যের হাত ধরে বিদেশ চলে যাওয়ার খবর পেয়ে দড়ি হাতে আত্মহত্যা করতে পার্কে এসেছিল প্রেমিক। সাইকোপ্যাথ, বেকার ও প্রেমিক এই তিনজন নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায়। সেই দুর্ঘটনার এক শিকার পথশিশু আবুল। বস্তির ছেলে আবুলের ছিল ঘুড়ি ওড়ানোর নেশা। তাকে ধরে নিয়ে আসা হয় নিশিকাব্যের উপকরণ হিসেবে। কাকতালীয়ভাবে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয় কবি, নিশিকন্যা, সন্ত্রাসী ও নৈশপ্রহরী। অনিশ্চিত এক গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে সাইকোপ্যাথ ও তার সঙ্গী-সাথীরা।
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ অতুল, শাখাওয়াত হোসেন, কাজী নুজহাত, আল রুবাইয়েত ও আবদুল মমিন। আলোক পরিকল্পনা করেছেন আসলাম অরণ্য। সংগীত পরিকল্পনা করেছেন রাইয়ান অনাবিল। তারিফ হোসাইনের পোশাকসজ্জায় মঞ্চসজ্জা করেছেন মঈন উদ্দিন পাঠান।
হাওড় অঞ্চলের সংস্কৃতিবিষয়ক সেমিনার ॥ কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে রাষ্ট্রপতির নামে ‘আব্দুল হামিদ শিল্পকলা একাডেমি ও আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’। হাওড় অঞ্চলের সংস্কৃতিক চর্চা ও প্রসারে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে কেন্দ্রটি। সেই সুবাদে ওই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য নিরূপণ ও সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ পর্যালোচনার জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ‘হাওড় অঞ্চলের সংস্কৃতি’ বিষয়ক গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বুধবার একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে বিশিষ্ট লোকগবেষক মু আ লতিফ, লেখক ও গবেষক আমিনুর রহমান সুলতান, লেখক ও সাংবাদিক সঞ্জয় সরকার, লেখক ও গবেষক গাজী মহিবুর রহমান, সামস সাঈদ, পার্থ তালুকদার, সাইফ বরকতুল্লাহ, জাকারিয়া ম-ল, সত্যজিৎ রায় মজুমদার সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন লেখক ফয়সাল আহমেদ। সঞ্চালনা করেন সৌম্য সালেক। সেমিনার শেষে হাওড় অঞ্চলের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন একাডেমির নৃত্য শিল্পীবৃন্দ। পরিবেশিত হয় ধামাইল নৃত্য।

×