ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুই হাত নেই, পায়ে লিখে ভর্তিযুদ্ধে হাবিব

ইবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ৫ জুন ২০২৩; আপডেট: ১৭:২৬, ৫ জুন ২০২৩

দুই হাত নেই, পায়ে লিখে ভর্তিযুদ্ধে হাবিব

পা দিয়ে ভর্তি পরিক্ষা দিচ্ছে হাবিব

নাম হাবিবুর রহমান। জন্মগত ভাবেই নেই দুই হাত। তবুও দমে যাননি তিনি। ছোট বেলা থেকেই পা দিয়ে লিখে চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। স্কুল, কলেজের গন্ডি পেরিয়ে অংশ নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভর্তিযুদ্ধে। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ে বড় আলেম হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।

সোমবার (জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব ও ইসলাম শিক্ষা অনুষদভূক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। অনুষদ ভবনের ১০৩ নং কক্ষে পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। এর আগে অংশ নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষাতেও।

হাবিব রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হিমায়েতখালি গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের দরিদ্র কৃষক আব্দুস সামাদের ছেলে। হাবিব পাংশার পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে পা দিয়ে লিখে  আলিমও পাস করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হাবিবুর রহমান। চার ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় তিনি। বড় দুই বোনের বিয়ে হলেও পরিবারে রয়েছে ছোট বোন। তিনিও পড়াশুনা করে। জন্মগতভাবেই হাতবিহীন হাবিব। ছোট বেলায় বাবা মা, চাচা ও পরিবারের অন্যদের অনুপ্রেরণায় পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করে। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করে।

শিক্ষা জীবনের প্রথম স্তরেই সে কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হিমায়েতখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে পা দিয়ে লিখে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৪.৬৭ পেয়ে পাশ করেন। এরপর শুরু হয় মাধ্যমিক শিক্ষা জীবনের দ্বিতীয় স্তর। এরপর পাংশা উপজেলার পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪.৬১ পেয়ে পাশ করেন। পরবর্তীতে একই মাদরাসা থেকে ২০১৯ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪.৬৩ পান তিনি।

এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী। দুই হাত নেই। পা দিয়ে লিখেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে আজ আমি আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি।এ পর্যন্ত আসতে আমার অনেক প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়েছে। নানান জন নানান কথা বলেছে। কিন্তু আমি তাতে কান দেইনি। নিজের আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছাশক্তির কারণে আজ আমি এতদূর এসেছি। এখন আমার স্বপ্ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এবং বড় আলেম হওয়া।

হাবিবুরের সাথে আশা তার এলাকার চাচা আজমল হোসেন বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীকতা তাকে আটকে রাখতে পারেনি। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে সে আজ এতদূর পর্যন্ত এসেছে। আমি তার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি।

এমএস

×