
ছবি: জনকণ্ঠ
বেসরকারি খাতে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান বিএটি বাংলাদেশ প্রযোজ্য সকল আইন ও নীতিমালা মেনে ১১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সততা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সাথে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সিগারেট শিল্পে একমাত্র তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং শেয়ারবাজারে অন্যতম বৃহৎ মূলধনী কোম্পানি হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
দেশের অন্যতম শীর্ষ করদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ শুধুমাত্র ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরেই ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, করপোরেট কর ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জসহ প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা সরকারকে রাজস্ব হিসেবে প্রদান করেছে। কর্মী, কৃষক, পরিবেশক, সরবরাহকারী ও খুচরা বিক্রেতাসহ প্রতিষ্ঠানটির ভ্যালু চেইনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ সম্পৃক্ত। দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছয়বার বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত ‘টপ এমপ্লয়ার্স ইনস্টিটিউট’ কর্তৃক শীর্ষ নিয়োগদাতার স্বীকৃতি অর্জন করেছে বিএটি বাংলাদেশ।
সম্প্রতি, কুষ্টিয়ায় বিএটি বাংলাদেশের গ্রিন লিফ থ্রেশিং প্ল্যান্টের সাবেক মৌসুমী শ্রমিকদের একটি দল তাদের কিছুদাবি উত্থাপন করেছেন। পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে, যথোপযুক্ত বিবেচনায় অধিকাংশ দাবি পূরণের জন্য ইতোমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি আমরা। তবে, আইনি ব্যাখ্যার ভিত্তিতে, কিছু দাবি বাংলাদেশের শ্রম আইনের বিধানের বাইরে বলে আমরা মনে করি।
শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে, আমরা আন্দোলনরত কর্মীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গঠনমূলক ও উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়েছি, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় একাধিকবার বৈঠকে বসেছি এবং আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে উন্নত সুবিধাও প্রস্তাব করেছি।
তামাক পাতা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে বর্তমান মৌসুমটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারখানার মাধ্যমে ৫০ হাজারেরও বেশি কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। যে কারণে কারখানার কার্যক্রম চলমান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিরাজমান শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কুষ্টিয়ার মৌসুমী কারখানার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি, যার ফলে বিএটি বাংলাদেশ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কারখানার কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায়, তামাক পাতা রপ্তানি হুমকির মুখে পড়েছে; একইসাথে, দেশের বাজারের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, প্রতিবাদী শ্রমিকরা এখন কাজে ফিরে যেতে ইচ্ছুক অন্যান্য শ্রমিকদের হুমকি দিচ্ছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে আন্দোলনটি সকল মৌসুমী শ্রমিকের সম্মিলিত চাওয়ার পরিবর্তে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা পরিচালিত।
এই সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে, আমাদের কারখানার কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখতে হতে পারে, যার ফলে শুধু আমাদের ব্যবসায় নয়, সরকারের রাজস্ব আয়েও বড় ধরণের ক্ষতি হবে—যা কারোরই কাম্য নয়।
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার ১১৫ বছরের ঐতিহ্য রয়েছে বিএটি বাংলাদেশের। এরই ধারাবাহিকতায়, আমরা আমাদের সকল কর্মীর অধিকার রক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিতে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। সকল অংশীজনের সহযোগিতায় চলমান পরিস্থিতির একটি শান্তিপূর্ণ এবং সবার জন্য সর্বোত্তম সমাধান নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা আমাদের।
এসইউ