ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ব্যবসা ও সমাজসেবার অঙ্গনে এক অনন্য নাম কে. এস. এম. স্বপ্নীল চৌধুরী সোহাগ। তিনি ব্লু ড্রীম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান এশিয়ান লাইফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার পেশাগত দক্ষতা, দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বগুণের জন্য তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একাধিক সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
দেশের একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রি অর্জনের পর ২০১০ সালে তিনি পোশাক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। পরের বছরই প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্লু ড্রীম কো. লিমিটেড’, যা আজ দেশের শীর্ষ পাইকারি পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তার নেতৃত্বে ব্লু ড্রীম গ্রুপ বর্তমানে ছয়টি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে, যার মধ্যে রয়েছে: ব্লু ড্রীম কো. লিমিটেড, ব্লু ড্রীম ফেব্রিক লিমিটেড, ব্লু ড্রীম ইন্টেরিয়র ডিজাইন লিমিটেড, ব্লু ড্রীম লেদার লিমিটেড, ব্লু ড্রীম রিয়েল এস্টেট লিমিটেড এবং অ-লাভজনক প্রতিষ্ঠান এশিয়ান লাইফ ফাউন্ডেশন।
বর্তমানে ব্লু ড্রীম গ্রুপ অনেক বেশি দেশি পোশাক রপ্তানি করছে। প্রতিষ্ঠানটি তুরস্ক, পাকিস্তান, চীন, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উচ্চমানের ফ্যাব্রিক আমদানি করে এবং বাজার চাহিদা অনুযায়ী ৪৮ ধরনের কাস্টমাইজড পোশাক উৎপাদন করে। ফ্যাশনপ্রেমীদের মাঝে প্রতিষ্ঠানটির ডিজাইন ও মান ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব উৎপাদন পদ্ধতির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্লু ড্রীম গ্রহণ করেছে “গ্রীন ফ্যাক্টরি” ধারণা, যা দেশের পোশাক শিল্পে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রথম আধুনিক বেসরকারি ফ্যাব্রিক টেস্টিং ল্যাব স্থাপন করেছে, যা ১০০% নিরাপদ ও ভাইরাসমুক্ত পোশাক উৎপাদনের নিশ্চয়তা দেয়।
স্বপ্নীল চৌধুরী সোহাগ মনে করেন, একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কেবল লাভের জন্য নয়, সমাজের উন্নয়নের জন্যও দায়বদ্ধ। এই চেতনা থেকেই তিনি ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক কল্যাণমূলক কাজেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছেন। প্রতিষ্ঠানটির একটি নির্দিষ্ট অংশ বরাদ্দ থাকে এতিমখানা, দরিদ্রদের সহায়তা ও বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগের জন্য।
ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি তিনি একজন লেখকও। তার লেখা বই “স্বপ্ন ও সফলতা” এবং “শূন্য থেকে স্বপ্নপূরণ” তরুণ উদ্যোক্তাদের মাঝে ব্যাপক অনুপ্রেরণা ছড়িয়েছে। এই বইগুলোতে তিনি তুলে ধরেছেন সফলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় মানসিকতা, পরিকল্পনা ও কর্মপদ্ধতির বাস্তবমুখী দিকনির্দেশনা।
তিনি নিয়মিতভাবে তরুণদের উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ, লিডারশিপ এবং উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে চলেছেন। ইতোমধ্যে বহু তরুণ-তরুণী তার দিকনির্দেশনায় নিজেদের উদ্যোক্তা জীবনের সূচনা করেছেন।
তার আন্তর্জাতিক অবদান এবং নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৪ সালে তিনি 'নেপাল ইন্টারন্যাশনাল এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। এর পাশাপাশি তিনি পেয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডি এবং নড়াইল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা।
স্বপ্নীল চৌধুরী সোহাগ বিশ্বাস করেন, ব্যবসায়িক সফলতা মানে শুধু আর্থিক প্রবৃদ্ধি নয়; এটি একটি সামগ্রিক মূল্যবোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং নৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার এই দর্শন ও নেতৃত্ব আগামী প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের জন্য এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
শহীদ
