
ছবিঃ সংগৃহীত
গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে যখন বিশ্বের প্রতিটি কোণায় মানুষ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত, তখনও উত্তর কোরিয়া এক বিচ্ছিন্ন ও রহস্যময় দেশের নাম। বিশ্বের অন্যতম আলোচিত নেতা কিম জং-উনকে ঘিরে যেমন আছে অজস্র কৌতূহল, তেমনি রয়েছে কঠোর অনুশাসনের বাস্তবতা। আর সেই অনুশাসনের বাইরে নেই তার স্ত্রী, উত্তর কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি রি সোল জু।
২০০৯ সালে কিম জং-উনের সঙ্গে রি সোল জুর বিয়ে হয়। ২০১২ সালে তাকে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে কিমের পাশে দেখা যায়। বিয়ের আগে তিনি ছিলেন একজন সঙ্গীতশিল্পী ও চিয়ারলিডার। নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ছিল তার রুটিনের অংশ। কিন্তু বিয়ের পর বদলে যায় সবকিছু। গায়িকা রি সোল হয়ে ওঠেন “নিয়মের ফাঁদে আটকে পড়া ফার্স্ট লেডি”।
জানা যায়, রিকে তার মতামত না নিয়েই কিম জোরপূর্বক বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই পরিবারের সঙ্গে তার সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এমনকি নিজের মা-বাবার সঙ্গেও সাক্ষাতের অনুমতি নেই তার। যদিও রির বাবা একজন অধ্যাপক এবং দেশের এক বিখ্যাত হাসপাতালের স্ক্রীন রোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক, তাদের সম্পদের পরিমানও কম নয়। কিন্তু অভিযোগ রিকে তার পরিবারের সাথে দেখা করতে দেয়া হয়না। মা বাবার সঙ্গে সাক্ষাত নিষিদ্ধ বিয়ের পর থেকেই।
রি সোল জুর ব্যক্তিগত জীবনেও রয়েছে কড়া নিয়ন্ত্রণ। প্রথমদিকে তাকে জিন্স পরতে দেখা গেলেও পরে তা নিষিদ্ধ করে দেন কিম। এমনকি চুল কীভাবে আচড়াবেন, তাও নির্ধারিত হয় কিমের নিয়ম মেনেই। পোশাক থেকে শুরু করে চলাফেরা—সবকিছুতেই কিমের অনুমতি লাগে।
রি কোথায় যাবেন, কখন বের হবেন, কোন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন—এসব সিদ্ধান্তও নেন কিম জং-উন নিজে। কোনো সিদ্ধান্তে রির নিজের মতামত বা পছন্দের সুযোগ নেই বললেই চলে।
কিমের দেশের সাধারণ নাগরিকদের মতোই শাসনের বেড়াজালে আবদ্ধ উত্তর কোরিয়ার ফার্স্ট লেডিও। এই ঘটনা আরও একবার সামনে এনে দেয় উত্তর কোরিয়ার সমাজব্যবস্থার কঠোর বাস্তবতা, যেখানে ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে কিছু নেই।
নোভা