
ছবি: সংগৃহীত
বেলজিয়াম থেকে স্পেনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিল রায়ানএয়ারের একটি নিয়মিত ফ্লাইট। কিন্তু মাঝ আকাশেই যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছিল এক অসাধারণ চমক—একজন নারী জন্ম দিলেন এক কন্যাশিশুর, আর তাঁর পাশে দাঁড়ালেন এক বেলজিয়ান সংসদ সদস্য।
ঘটনাটি ঘটেছে ৮ মে (বৃহস্পতিবার)। ফ্লাইটটি ব্রাসেলস থেকে স্পেনের কাস্টেলনের দিকে যাচ্ছিল। তবে গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই, ফ্রান্সের আকাশসীমায় প্রবেশ করার সময়ই প্রসব বেদনা ওঠে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর। পরে বিমানের পাইলট তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফ্লাইটটি ফ্রান্সের লিমোজ শহরে জরুরি অবতরণ করান।
এই নাটকীয় ঘটনার সময় বিমানে উপস্থিত ছিলেন বেলজিয়ামের পার্লামেন্ট সদস্য ক্যাথলিন ডিপোর্টার, যিনি তাঁর ছেলেকে নিয়ে কাস্টেলনে জন্মদিন উদযাপন করতে যাচ্ছিলেন।
ডিপোর্টার বলেন, “আমি দেখলাম একজন নারী বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে বিমানসেবিকাদের বলছেন তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। পরে তিনি জানান তিনি ৩৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা—তখনই আমি বুঝে যাই ব্যাপারটা গুরুতর।”
তিনি জানান, তিনি নিজে ফার্মেসি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং তাঁর ছেলে একজন চিকিৎসক। তাঁদের সঙ্গে বিমানে থাকা আরও কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী মিলেই দ্রুত বিমানের পেছনের অংশে অস্থায়ী 'মাতৃবিভাগ' তৈরি করে প্রসব সম্পন্ন করেন।
একজন ধাত্রী প্লাসেন্টা ডেলিভারি সম্পন্ন করেন, এবং একজন শিশু বিশেষজ্ঞ নবজাতকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিশ্চিত করেন—শিশুটির জন্ম হয়েছে সুস্থভাবেই। মা ও শিশু দু’জনই বর্তমানে ফ্রান্সের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং সুস্থ রয়েছেন।
ডিপোর্টার বলেন, “২৫ বছর আগে আমি নিজে যখন সন্তান জন্ম দিয়েছিলাম, তখনকার স্মৃতি হঠাৎ করেই যেন ফিরে এলো। আকাশে, বিমানের ভেতরে এমন অভিজ্ঞতা সত্যিই ব্যতিক্রমী।”
রায়ানএয়ারের নিয়ম অনুযায়ী, ২৮ সপ্তাহের পর গর্ভবতী নারীদের ‘ফিট টু ফ্লাই’ সনদপত্র থাকা বাধ্যতামূলক, এবং ৩৬ সপ্তাহ পার হলে তাদের বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয় না। কিন্তু ওই যাত্রী ৩৭ সপ্তাহে কিভাবে ফ্লাইটে উঠলেন, তা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি রায়ানএয়ার।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মাঝ আকাশে সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা বিরল হলেও নতুন নয়। গত বছর মার্চ মাসেও, হাইতির এক শরণার্থী নারী মেক্সিকান আকাশে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন, এবং একই মাসে লন্ডনের এক চিকিৎসক জর্ডান থেকে ফেরার পথে উইজ এয়ারের ফ্লাইটে এক নারীর প্রসব করাতে সহায়তা করেছিলেন।
এসএফ