ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এনআই বুলবুল

নির্বাচনের মাঠে তারকাদের দৌড়ঝাঁপ ॥ নায়ক বনাম ভিলেন

প্রকাশিত: ০১:৫৭, ২০ জানুয়ারি ২০২২

নির্বাচনের মাঠে তারকাদের দৌড়ঝাঁপ ॥ নায়ক বনাম ভিলেন

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ১৭তম নির্বাচন আগামী ২৮ জানুয়ারি। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দুটি প্যানেল। যার একটি হলো ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণের প্যানেল। অন্যটি হলো মিশা সওদাগর-জায়েদ খানের। নতুন বছরের শুরু থেকেই নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েন দুই প্যানেলের প্রার্থীরা। চমক নিয়ে আসার চেষ্টা ছিল দুটি প্যানেলেই। গুঞ্জন ওঠে এক সময়ের জনপ্রিয় জুটি নাঈম-শাবনাজও নির্বাচন করবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি আর হয়নি। এদিকে গেল বছর মিশা-জায়েদ খান প্যানেলের সঙ্গে লড়াই করেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এবার তিনি সেই জায়েদ খানের প্যানেলের হয়েই নির্বাচন করছেন। এছাড়া দুটি প্যানেলেই অংশগ্রহণ করছেন দেশের জনপ্রিয় তারকাদের অনেকেই। এদেরমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলেনÑ মনোয়ার হোসেন ডিপজল, নায়ক রুবেল, বাপ্পারাজ, রিয়াজ, শাকিল খান, মৌসুমী, সাইমন, ইমন, নিরব, অরুণা বিশ্বাস, কেয়া, আলেকজান্ডার বো, জয় চৌধুরী ও গাঙ্গুয়া। তবে এবার মজার বিষয় হলো দুটি প্যানেলে সভাপতি পদে লড়ছেন নায়ক এবং ভিলেন। প্রায় ৩৩ বছর পর শিল্পী সমিতির নির্বাচন করছেন নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এর আগে ১৯৮৯ সালে তিনি শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। ঝিমে ধরা চলচ্চিত্রকে আবার চাঙ্গা করতেই নির্বাচন করছেন বলে জানান তিনি। নির্বাচিত হলে বেশ কিছু পদক্ষেপও বাস্তবায়নও করতে চান তিনি। তার প্যানেল নির্বাচিত হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও নিয়ে আসতে চান বিএফডিসিতে। এ অভিনেতার সঙ্গে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গত মেয়াদের সভাপতি মিশা সওদাগর। দীর্ঘ সময় পর নির্বাচন করা প্রসঙ্গে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ৩৩ বছর পর নির্বাচন করছি। এটি হঠাৎ কোন সিদ্ধান্তে নয়। আমার প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক নিপুণ যখন আমাকে প্রস্তাব দেয় তখন আমি কোন উত্তর দিইনি। এরপর দশ দিন এটি নিয়ে ভেবেছি। এছাড়া আমার ছেলে আমার উপদেষ্টা হিসেবে আছে। সেও বলল যে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমার যশ-খ্যাতি সব হয়েছে তার জন্য কিছু করা প্রয়োজন। সব মিলিয়ে মনে হলো আসলেই এভাবে আমাদের সিনেমাকে শেষ হতে দেয়া যায় না। গেল কয়েক বছর শিল্পীদের দুস্থ বলে নানাভাবে সাহায্য করা হয়েছে। ‘বেদের মেয়ে জোসনা’খ্যাত সিনেমার এ অভিনেতা বলেন, সাহায্য না। আমরা শিল্পীদের কাজ দিতে চাই। সব শিল্পী যখন সমানভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে তখন কারও দিকে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে না। গেল কয়েক বছর সিনেমার সব শিল্পী কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে না। যার কারণে আজ ইন্ডাস্ট্রির এমন করুণ অবস্থা দেখতে হচ্ছে। এদিকে তৃতীয়বারের মতো কেন মিশা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেবা করতে চাই। ভিলেন হিসেবে কাজ করার কারণে নায়কদের সঙ্গে আমার যেমন সুসম্পর্ক আছে তেমনি নায়িকা, কমেডিয়ান ও অন্য শিল্পীদের সঙ্গেও দারুণ সখ্য। আমি সিনিয়রদের যেমন সম্মান করি একই রকমভাবে জুনিয়রদেরও আমার পাশে বসাই। আমি আসলে শিল্পীদের জন্য কাজ করতে চাই। শিল্পীদের সেবা করাই আমার লক্ষ্য। এ অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে সম্মান জানিয়ে বলেন, তিনি শুধু আমার নায়ক নন, তিনি এ দেশের নায়ক। সুতারং তার জয় মানে আমার জয়। উনার জয় মানে বিশাল একটি গোষ্ঠীর জয়। এদিকে করোনার কারণে গেল দুই বছর খুব বেশি সিনেমা নির্মাণ হয়নি। একইসঙ্গে সিনেমা হল বন্ধ থাকায় সিনেমাও মুক্তি পায়নি। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে যে সিনেমা মুক্তি পাবার কথা ছিল সেটিও পিছিয়ে যায়। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মন্তব্য গেল কয়েক বছর নির্বাচন-পিকনিক এসবই হচ্ছে। কিন্তু সিনেমার উন্নয়নের জন্য তেমন কিছুর দেখা নেই। এবার নির্বাচনে পর সেটির কতটা পরিবর্তন আসবে সেটিই এখন সবাই দেখার অপেক্ষায় আছে।
×