ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খুললো বহুল আকাঙ্খিত রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর সেতু

প্রকাশিত: ১৭:২৭, ১২ জানুয়ারি ২০২২

খুললো বহুল আকাঙ্খিত রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর সেতু

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর চেঙ্গি নদীর সেতু উদ্ভোধন করেছেন। বুধবার সকাল ১০ টায় ভার্চ্যুয়ালি ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্যবাসীর বহুখাঙ্খিত এই সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সহ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন বলেছেন র্দীঘ ২ দশক দরে অশান্ত পার্বত্য অঞ্চল শান্তি চুক্তি করে এখানে আমরা শান্তি ফিরিয়ে এনেছি। আমরা চুক্তি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা ৫০০ মিটার র্দীঘ নানিয়াচর সেতু নির্ন্মন করেছি, বালুখালী ঘনধুন সীমান্ত সড়ক করেছি। এই সড়ক আর্ন্তজাতিক এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। এখানে সীমান্ত সড়ক হচ্ছে । সীমান্ত পোষ্ট হবে । কাপ্তাই হ্রদ বেষ্ঠিত নানিয়াচর উপজেলায় এই সেতু হওয়ার ফলে এখানকার উৎপাদিত পণ্য সহজে রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামে নেয়া যাবে। একই সঙ্গে সেখানে পর্যটন স্পট গড়ে উঠবে। সড়ক ও এই সেতু নির্ন্মন এর ফলে পার্বত্য শান্তি চুক্তির আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে বলে প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য বাসীর উদ্দেশ্যে বলেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চেঙ্গি সেতু প্রান্তরে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রানালয় সর্ম্পিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার , কক্সবাজার ১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম , ২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, ৩ আসনের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার , মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা , পার্বত্য চট্গ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি ডঃ প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, আবদুল ওয়াহিদ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সড়কও সেতু বিভাগ । ২৪ পদাতিক ডিভিশনের চট্টগ্রাম এর জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিন , ৩৪ ইসিবির কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদুর রহমান, রিজিয়ন কমান্ডার রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও গুইমারা রিয়িন প্রমুখ। এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সারা দেশের সঙ্গে ৫ উপজেলার নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াতের পথ খুলে গেল। একসময় নদী পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগার পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। সেতুটি উন্মুক্ত হওয়ার কারণে পাহাড়ের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, এ সেতু নির্মাণের নকশা কিছুটা ব্যতিক্রম। ২ লেনবিশিষ্ট সেতুটি নির্মিত হয়েছে উন্নত প্রযুক্তিতে। নদীর জলতল থেকে সেতুটি নান্দনিক ডিজাইনে করা হয়েছে । উভয় পাড়ে পথচারীর চলাফেরার সুযোগ রয়েছে। এই সেতুতে ১৩০ মিটার গভীর পাইল বসানো হয়েছে। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক থাকবে। এছাড়াও, সেতুর পিলারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এতে কোনো কিছুর ধাক্কায় সেতুর ক্ষতি ঠেকানো সম্ভব হবে, বাড়বে সেতুর স্থায়িত্ব। আলাদা সাবস্টেশনের মাধ্যমে সেতুতে বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে বাতি জ্বলবে। থাকছে বিদ্যুতের ব্যবস্থাও। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৃষ্টিনন্দন এই নানিয়ারচর সেতু দেখতে সেতু এলাকায় মানুষের ভিড়। সন্ধ্যায় ঝলমল আলোয় আলোকিত হয়ে উঠছে সেতুটি। উদ্বোধনের সাথে সাথে এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব নিখিল কুমার চাকমা রাঙ্গামাটি আসনের এমপি দিপংকর তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির এই সেতু আজ দৃশ্যমান। এই সেতু পার্বত্যঞ্চলের যোগাযোগ একধাপ এগিয়ে নেবে,চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্বপ্নের সেতু উন্মোচন হল। স্বপ্নপূরণ হল পার্বত্যঞ্চলের মানুষের।
×