ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশ থেকে পালাতে চেয়েছিলেন রাজশাহীর মেয়র আব্বাস

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ১ ডিসেম্বর ২০২১

দেশ থেকে পালাতে চেয়েছিলেন রাজশাহীর মেয়র আব্বাস

অনলাইন ডেস্ক ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী গ্রেফতার এড়াতে দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন। তাই ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে আব্বাস আলী জানিয়েছেন ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডটি তার নিজের। জাতির পিতার ম্যুরাল স্থাপনের বিরোধিতা করে কিছু মন্তব্যের একটি অডিও ভাইরাল হওয়ার পর গত সপ্তাহ তিনেক ধরে আলোচনায় রয়েছেন আব্বাস। আজ বুধবার ভোরে ঢাকার কাকরাইলের হোটেল রাজমনি ঈশা খাঁ থেকে তাকে গ্রেফতার করার কথা জানায় র্যাব। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন পরে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর থেকেই তাকে খোঁজা হচ্ছিল। গত ২৩ তারিখ থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করেছেন মঙ্গলবার তিনি হোটেলে ঈশা খাঁয় অবস্থান নিলে র্যাব গোয়েন্দারা জানতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘তার কাছে পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তার দেশত্যাগের পরিকল্পনা ছিল।” টানা দুইবার রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত আব্বাস আলী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিন নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়ছিলেন। সম্প্রতি ওই অডিও টেপ ফাঁস হওয়ার পর আব্বাসকে পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদের পাশাপাশি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নবেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অডিও টেপে বলতে শোনা যায়, রাজশাহী সিটি গেইটে বঙ্গবন্ধুর যে ম্যুরাল করার নকশা দেওয়া হয়েছে, সেটা করতে দিলে ‘পাপ হবে’। কাটাখালীর পৌর মেয়রের ওই অডিও ভাইরাল হলে রাজশাহীতে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ। এরপর রাজশাহীর নগরের রাজপাড়া, বোয়ালিয়া ও চন্দ্রিমা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি মামলা হয় এই মেয়রের বিরুদ্ধে। মেয়র আব্বাস প্রথামে দাবি করেছিলেন, ওই অডিও ‘এডিট করা’। তবে পরে ফেইসবুক লাইভে এসে তিনি স্বীকার করেন, ওই অডিও তিন-চার মাস আগের, ওই বক্তব্যও তার। আব্বাস সেখানে বলেন, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার বড় হুজুরের কথায় প্রভাবিত হয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল না রাখার বিষয়টি বলেছিলেন ‘কথাচ্ছলে’। যদি এটা এত বড় ভুল হয়ে থাকে, সেজন্য তিনি ক্ষমা চান। ‘চক্রান্ত হচ্ছে’ দাবি করে সবাইকে পাশে দাঁড়ানোরও অনুরোধ করেন। র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, “ডিজিটাল মাধ্যমে যে বক্তব্য প্রচার হয়েছে, সেটা মেয়র আব্বাসেরই বক্তব্য, তিনি সেটা আমাদের জানিয়েছেন।” এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি ওই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন- এমন কিছু মেয়র আমাদের বলেননি।” উল্লেখ্য সম্প্রতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের করা হয়।
×