ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেট থেকে সরাসরি পণ্য রফতানি করা হবে ॥ মোমেন

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ২৭ নভেম্বর ২০২১

সিলেট থেকে সরাসরি পণ্য রফতানি করা হবে ॥ মোমেন

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সিলেট থেকে সরাসরি বিদেশে পণ্য রফতানির প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি শুক্রবার সকালে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্স পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবসময় নানা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখতে চায়। তারা কখনও গণতন্ত্রের কথা বলে, আবার কখনও সুশাসন, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির কথা বলে এ রকম চাপ সৃষ্টি করে। এটা তাদের একটি রাজনীতি। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত না পাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কে দাওয়াত দিল আর না দিল তাতে কিছু আসে যায় না। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে। এটা অন্য কেউ করে দিবে না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দাওয়াত না দেয়া নিয়ে এত চিন্তা কেন। দুনিয়াজুড়ে তো শত শত সম্মেলন হচ্ছে। বাইডেন প্রশাসন অনেক কষ্ট করে এটা আয়োজন করেছেন। তারা নিজেও অনেক ঝামেলায় আছে। এ রকম একটি পরিপক্ক গণতান্ত্রিক দেশেও ঝামেলা হয়। সেদিক দিয়ে আমরা খুব ভাল আছি। আর গণতন্ত্র অন্য কেউ শেখাবে না। দেশের লোকজনই শেখায়।’ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক বছর ধরে স্থিতিশীল গণতন্ত্র আছে। সব দেশেরই ব্যতয় আছে, দুর্বলতা আছে। সব বিষয় সামনে নিয়ে দিনে দিনে যাতে ভাল করতে পারি তা আমাদেরই ঠিক করতে হবে। অন্যের ফরমায়েশে গণতন্ত্র হয় না। আমরা আমাদের গণতন্ত্র শক্তিশালী করব কে দাওয়াত দিল, আর না দিল তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা কেন ? বরং আমাদের চিন্তা করা উচিত আগামী নির্বাচনে যাতে একটি লোকও মারা না যায়। কোথাও কোন বিচ্যুতি থাকলে তা সমাধান করার চেষ্টা করব।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দেশে এক সময় গণতন্ত্র ছিল না, দেশের মানুষই গণতন্ত্র এনেছে। আমেরিকার গণতন্ত্রের নমুনা তো দেখেছি, গণতন্ত্র সম্মেলনে কোন কোন দেশকে দাওয়াত দিয়েছে তাও দেখেছি। কাকে দাওয়াত দেবে এটাও তাদের বিষয়। সকালে ৯টার দিকে একদিনের সফরে সিলেটে পৌঁছান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, এমপি। বিমানবন্দের নেমেই নির্মাণাধীন নতুন কার্গো টার্মিনাল ঘুরে দেখেন তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অনেক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। এই বিমানবন্দরে শুধু সিলেটের মানুষ নয়, ভারতের ‘সেভেন সিস্টারের’ লোকজন এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এই বিমানবন্দর এই অঞ্চলের আকাশপথের যাত্রীদের একটি হাব হবে। এখন সিলেট থেকে দুটি দেশে সরাসরি ফ্লাইট যাচ্ছে। আগামীতে সরাসরি আরও অনেক ফ্লাইট বাড়বে। কার্গো টার্মিনালের কাজ শেষ হলে এখান থেকে সিলেটের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি করতে পারবেন। সিলেটের অনেক কৃষিপণ্য বিদেশে রফতানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ প্রবাসীরা দেশে ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমাদের প্রবাসীরা দেশে ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। যা জাতীয় বাজেটের বড় একটা অংশ। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে বিদেশ গেলে সেটি একদিন ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে বিশ্বাস করি। শুক্রবার দুপুরে ইউসেপ হাফিজ মজুমদার সিলেট টেকনিক্যাল স্কুলের ‘ইউসেপ কৃতী শিক্ষার্থী’ সংবর্ধনা ২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যুক্তরাজ্যে বেকারত্বের হার খুবই কম। কারণ ওখানকার লোকজন উদ্যোক্তা হিসেবে মানুষকে চাকরি দেয়, চাকরির পেছনে না ছুটে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু সাধারণ বিভাগে পড়াশোনা করলে চলবে না কারিগরি শিক্ষা নিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠতে হবে। ডিগ্রী অর্জন করে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। চাকরির পেছনে না ছুটে চাকরি দিতে হবে। ড. মোমেন আরও বলেন, মেধা ও ইচ্ছাশক্তি থাকলে সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছানো সম্ভব। এটা মনের মধ্যে জাগাতে পারলে পড়ালেখায় কৃতিত্ব অর্জন সম্ভব। ইউসেপ সিলেটের শিক্ষকরা সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মননে এ মনোবল সৃষ্টি করায় শিক্ষার্থীরা অনন্য অসাধারণ ফলাফল অর্জন করতে পেরেছে। এজন্য আমি শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানাই। আগামীতে ইউসেপ বাংলাদেশের মহৎ এ কাজের সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী।
×