ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ দুর্গা মন্দির বরিশালে

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ১৩ অক্টোবর ২০২১

উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ দুর্গা মন্দির বরিশালে

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ প্রয়াত জমিদার মোহন লাল সাহার বাড়িতে মহাধুমধামের মধ্যদিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ভক্তদের পদচারনায় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। সিংহ মুর্তি খচিত জমিদার বাড়ির এ মন্দিরটি ১৭১ বছরের পুরনো ও তৎকালীন ভারতীয় উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ দুর্গা মন্দির। জেলার গৌরনদী উপজেলার আশোকাঠী গ্রামের জমিদার বাড়ির সামনে অবস্থিত এ দুর্গা মন্দিরটি এতদাঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহৎ হওয়ায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও মহাধুমধামের সাথে এখানে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জমিদার বাড়ির উত্তরসূরীদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, ১৮৫০ সালে খ্যাতিমান জমিদার মোহন লাল সাহার বাবা জমিদার প্রসন্ন কুমার সাহার উদ্যোগে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। কারুকার্জ খচিত ঐতিহাসিক এ মন্দিরের ছাঁদের ওপরের চারিপার্শ্বের সিংহ মূর্তিগুলো আজো যেন কালের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে। সূত্রমতে, তৎকালীন সময়ে ভারতীয় উপ-মহাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ মন্দির হিসেবে এ মন্দিরটিতে ভক্ত দর্শনার্থীরা পূজা অর্চনা করতে ভীড় করতেন। প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার দুর্গা প্রতিমার এ মন্দিরটিতে এখনো পূর্বের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। ৩০ গজ দৈর্ঘ্য, ২০ গজ প্রস্থ মন্দিরটিতে রয়েছে নকশা করা ৪৫টি স্তম্ভ। জমিদার মোহল লাল সাহার নাতী প্রভাষক রাজা রাম সাহা জানান, ১৯৭১ সালে পাক হানাদার ও তাদের স্থানীয় সহযোগি রাজাকাররা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট করেছিলো। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিলো পাইক পেয়াদাদের ঘরবাড়ি। গুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো দুর্গা মন্দিরের অসংখ্য কারুকার্জ খচিত অলংকরণ। গৌরনদী উপজেলার সদর থেকে প্রায় এক হাজার ফুট দূরত্বে আড়িয়াল খাঁ নদীর প্রশাখা গৌরনদী-মীরেরহাট নদীর তীরে আশোকাঠী গ্রামে জমিদার মোহন লাল সাহার বাড়ি। বাড়ির সামনেই রয়েছে সান বাঁধানো সু-বিশাল দিঘি। জমিদার থাকতেন প্রসন্ন ভবনে। বাড়ির প্রবেশদ্বারে প্রাচীণতম সু-বৃহৎ দুর্গা মন্দিরে আজো ভক্তরা পূজা অর্চনা করে আসছেন। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, একসময় জমিদার বাড়িতে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের জন্য প্রায় বারো মাস যাত্রা, জারি, সারী ও পালা গানের আয়োজন করা হতো। হাজার-হাজার মানুষের পদচারনায় মুখরিত ছিলো এ বাড়িটি। পুরনো দিনের সেই জৌলুস এখন অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে।
×