ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি মুখে যা বলে তা মনে ধারণ করে না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিএনপি মুখে যা বলে তা মনে ধারণ করে না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ ‘বিএনপি তাদের নেতাকে (জিয়াউর রহমান) মুখে মুক্তিযোদ্ধা বললেও মনে তা ধারণ করে না বলেই তারা মুনাফিক’, এমন মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি। তিনি বলেন, বিএনপি কোনো অবস্থাতেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল নয়। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে কথা বলে না। তারা ঢালাওভাবে শুধু সরকারের বাজেটের বিরোধিতা করে। শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কষ্ট লাঘবে সম্মানি ২০ হাজার টাকা করে দিয়েছে। এটা নিয়ে তো মুক্তিযোদ্ধার দল দাবিদার বিএনপি কোনো কথা বলেনি। তারা মুখে তাদের নেতাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও মনের ভিতরে তা ধারণ করে না। এরা হলো মুনাফিক। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর টাউন হল মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি কথা সম্বলিত ‘স্মৃতিতে রণাঙ্গন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি এসব কথা বলেন। রংপুর মহানগরের ৭২ জন মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিবিজড়িত মুক্তিযুদ্ধের কথা এ বইটিতে তুলে আনা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রংপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। একাত্তরের সম্মুখযুদ্ধে পরাজিতরা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর স্বপ্নে বিভোর হয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন দাবি করে টিপু মুনশি বলেন, ১৫ আগষ্টের পর জয়বাংলার পরিবর্তে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর আঘাত করে স্বাধীনতা বিরোধীরা। যে স্লোগান দিয়ে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করলাম, পনেরো আগস্টের পরই সেই জয়বাংলা স্লোগান হয়ে গেল বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। এটা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর করা প্রথম আঘাত। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে পাকিস্তান প্রীতিকে জাগিয়ে রেখে বাংলাদেশকে ২১ বছর পিছনে ফেলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নে বিশ্বের মডেল। পাকিস্তান এখন বাংলাদেশের চেয়ে সব সূচকে পিছনে পড়ে গেছেন। আমাদের রিজার্ভ যখন ৪৮ মিলিয়ন ডলার, তখন পাকিস্তানের রিজার্ভ আমাদের অর্ধেক। প্রতিটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন পাকিস্ানের চেয়ে এগিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের স্মৃতিচারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে একেকটি ইতিহাসের স্বাক্ষীর মৃত্যু ঘটছে। তাই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মকে জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর লেখা কারাগারের রোজনামচা, অসমাপ্ত আত্মজীবনীসহ তাকে নিয়ে লেখা যত বই আছে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে তা পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, জেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহাবুব রহমান, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সরকার রফিক প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। পরে প্রধান অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ‘স্মৃতিতে রণাঙ্গন’ বইটি তুলে দেন। এসময় জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ উপস্থিত ছিলেন।
×