ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কক্সবাজারে পানি নেমে যাচ্ছে ॥ এখনও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত: ২২:১১, ৩১ জুলাই ২০২১

কক্সবাজারে পানি নেমে যাচ্ছে ॥ এখনও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। নেমে যাচ্ছে পানি। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ, পাহাড়ী ঢল ও পাউবো নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে মাতামুহুরী নদীর পানি ঢুকে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে পেকুয়া, চকরিয়া ও কুতুবদিয়ায়। এসব এলাকার গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ গত তিনদিন ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। একইভাবে গত তিনদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের দেখা নেই। বন্যাকবলিত এলাকায় শত শত নলকূপ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর ফলে বন্যাকবলিত এলাকাসমূহে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এদিকে পাহাড়ী ঢল ও বর্ষণে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে তলিয়ে গেছে লোকালয়। ফলে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। জানা গেছে, পেকুয়ার তিনটি পয়েন্টে পাউবো নিয়ন্ত্রণাধীন বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় কমপক্ষে ৫০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়েছিল। এদিকে, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোতাছেম বিল্লাহ সরকারী বরাদ্দ হতে পেকুয়া উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবারসহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ইউএনও বানভাসী মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। পেকুয়া সদর পূর্ব মেহেরনামা এলাকায় বেড়িবাঁধের দু’পয়েন্টে ভেঙ্গে যাওয়ায় সদর ইউনিনের পূর্ব মেহেরেনামা মোরারপাড়া, বাজারপাড়া, সৈকতপাড়া, নন্দীরপাড়া, হরিণাফাঁড়ি, চৈরভাঙ্গা, চড়াপাড়া, তেলিয়াকাটা, সাবেক গুলদি, সরকারী ঘোনা, নতুন বাগুবাজার, সাকুতলাসহ বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হয়। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের শিলখালীর পেঠান মাতবরপাড়া, হাজিরঘোনা, দোকানপাড়াসহ প্রায় ৮/১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। বন্যাকবলিত এসব গ্রামের লোকজনকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। জোয়ারের পানির আঘাতে উজানটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়া গোদারপাড়া স্টেশনের অদূরবর্তী স্থানে একটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে পূর্ব উজানটিয়ার সুতাচোরা, গোদারপাড়া, নুরীরপাড়া, রুপালি বাজারপাড়া, দক্ষিণ সুতাচুরা, মালেকপাড়া, ঠান্ডারপাড়া, আতর আলীপাড়াসহ বিপুল এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। বাঁশখালী ॥ চট্টগ্রাম অফিস জানায়, বাঁশখালীতে টানা বর্ষণে বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কিছু মাটির বসতঘর। পাহাড়ী ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের। এছাড়াও বেশ কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। পানির তোড়ে কাঁচা রাস্তাগুলো ভেঙ্গে একেবারেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রবল বর্ষণের ফলে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে বৈলছড়ি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের খদুলাপাড়া এলাকায় মৃত ফরিদ আহমদের পুত্র আজিজ আহমদের মাটির বসতঘরটি সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ে যায়। এ সময় দেয়াল ধসে পড়ার শব্দ শুনে বাড়ির লোকজন দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ায় প্রাণে রক্ষা পায়। তবে সমস্ত আসবাবপত্র মাটি চাপা পড়ে সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয় বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা যায়। বর্তমানে তারা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। প্রবল বর্ষণের ফলে প্রায় ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গিয়ে বীজতলা সম্পূর্ণ রূপে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, খানখানাবাদ, বাহারছড়া, কালীপুর, বৈলছড়ি, পৌরসভার জলদী, শীলকূপ, গন্ডামারাসহ বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য ঘের ও পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গিয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্যজীবীরা।
×