ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নতুন ভাস্কর্য ঘিরে দারুণ কৌত‚হল

সদলবলে হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে হাতিরঝিলে

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ২০ জুন ২০২১

সদলবলে হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে হাতিরঝিলে

মোরসালিন মিজান ॥ হাতিরঝিল বলে কথা। হাতি না হলে চলে? শেষতক সেই হাতি এলো। ঝিলপাড়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে হাতির দল। না, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ হাতি আসলে হাতির ভাস্কর্য। অতি সম্প্রতি ভাস্কর্যগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তার পর থেকে হাতিরঝিলে হাতি ঘিরে দারুণ কৌত‚হল। ওয়াকওয়ে ধরে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই থামছেন দর্শনার্থীরা। খুঁটিয়ে দেখছেন। ছবি তুলছেন। ঢাকার ইতিহাস বলছে, একসময় শহরের একাধিক স্থানে হাতির বিচরণ ছিল। পিলখানার হাতির পালের ছবি তো এখনও দেখা যায়। ঘুরে ফিরে সামনে আসে সেই সে কালের ছবি। একইভাবে হাতিরঝিল এলাকায় হাতির বাস ছিল বলে জানা যায়। ধারণা করা হয়, হাতির উপস্থিতির কারণেই ঝিলটির নামকরণ করা হয় হাতিরঝিল। অবশ্য বর্তমানের প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। আমূল বদলে গেছে ঢাকার জনজীবন। প্রকৃতি পরিবেশে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। হাতিরঝিলে তাই হাতির কোন পদচিহ্নও নেই। তবে ফিরে দেখতে অসুবিধা কী? পুরনো ইতিহাসটি আজকের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার একটা দায়ও ছিল। সে দায় থেকেই এখানে হাতির ভাস্কর্য গড়া হয়েছে। হ্যাঁ, বিপুল প্রশংসিত হাতিরঝিল প্রকল্পের আওতায় ভাস্কর্যগুলো গড়া হয়। বিদেশে যেমন দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য পার্ক চোখে পড়ে, অনেকটা সেই আদলে। গাছপালা বেষ্টিত ঝিলের ধারে উন্মুক্ত স্থানে হাতি দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে আছে বটে। দেখলে মনে হবে জীবন্ত। বিশাল বিস্তৃত ঝিলের দুই অংশে এগুলো স্থাপন করা হয়েছে। কাওরানবাজার অংশে একটি হাতি পরিবার। আরেকটি হাতি পরিবারের অবস্থান পুলিশপ্লাজা অংশে। উভয় পরিবারে আছে পুরুষ নারী ও বাচ্চা হাতি। সবই গøাসফাইবারে নির্মিত। হাতিগুলোর ফর্ম প্রকৃত হাতির তুলনায় কিঞ্চিৎ বড়। ফলে অনেক দূর থেকে দৃষ্টিগোচর হয়। হাতিরঝিল প্রকল্প অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ এই বাহিনী দেখভালের কাজটিও করছে আন্তরিকতার সঙ্গে। প্রকল্পের মূল কাজ শেষ হলেও কিছু কাজ এখনও চলমান। এর অংশ হিসেবে ভাস্কর্যগুলো গড়া হয়েছে বলে জানা যায়। ভাস্কর্য শিল্পীর নাম ইন্দ্রজিৎ মÐল। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রকৃত হাতি দেখে প্রথমে ড্রইং করে নেন তিনি। গ্রাফিক্সের কাজ করেন। পরে বাঁশ ও খড় দিয়ে ফিগার দাঁড় করান। এভাবে নানা প্রক্রিয়া অবলম্বন করে যথার্থ অবয়বে পৌঁছান। ডায়াস ব্যবহার করে মূল কাজ সম্পন্ন করেন। ভাস্কর জানান, এজন্য শ্যামলীর আদাবড়ে নিজের ওয়ার্কশপে প্রায় দুই বছর কাজ করতে হয়েছে তাকে। পরে এগুলো হাতিরঝিলে এনে স্থাপন করা হয়। হাতিগুলো উচ্চতায় ১০-১২ ফিট। ফিগারের মাপ মোটামুটি ৫৪ ইঞ্চি। সব মিলিয়ে বেশ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অবশ্য বলে কী আর বোঝানো যায়? সময় সুযোগ করে বরং দেখে আসুন একবার। বিশেষ করে ছোটদের ভীষণ ভাললাগবে।
×