ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ওয়েবিনারে সালমান রহমান

পুঁজিবাজারের সামনে ভাল ভবিষ্যৎ রয়েছে

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২০ জুন ২০২১

পুঁজিবাজারের সামনে ভাল ভবিষ্যৎ রয়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজার যেভাবে এগোচ্ছে তাতে সামনে ভাল ভবিষ্যত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব নেয়ার পর পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। আস্থা ফিরে আসায় বাজারে লেনদেন অনেক বেড়েছে। শনিবার অনুষ্ঠিত ‘বাজেট আলোচনা ও পুঁজিবাজার উন্নয়নে রোডম্যাপ’ শীর্ষক ওয়েবিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) যৌথভাবে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। সালমান এফ রহমান বলেছেন, এইচএসবিসি স¤প্রতি তাদের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে বিশ্বের অন্যতম বেস্ট পারফরমিং বাজার হিসেবে অভিহিত করেছে। এই মার্কেটের অনেক সুযোগ আছে। গত এক বছরে এক নতুন ধরনের বাজারের সৃষ্টি হয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, কমিশনার প্রফেসর ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বর্তমান কমিশন বাজারের উন্নয়নে বেশ কিছু ভাল উদ্যোগ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবারে বিএসইসি শেয়ারের লোয়ার ক্যাপ (ফ্লোর প্রাইস) তুলে দিয়েছে। পুঁজিবাজার যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে বাজারের ভাল ভবিষ্যত আছে। তিনি বলেন, এই বাজারের একটা মূল সমস্যা ছিল। সেটি হচ্ছে- এখানে শুধু ইক্যুইটি নির্ভর বাজার আছে। বন্ড মার্কেট নেই। বিএসইসি বন্ড মার্কেট চালু করার জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সুকুক বন্ড নিলাম করছে। কিছুদিনের মধ্যে বন্ড মার্কেট চালু হয়ে যাবে আশা করা যায়। তিনি মনে করেন মার্কেটের পরিধি বাড়লে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, স্টোক ব্রোকার ও স্টেকহোল্ডারদের দায়িত্ব বেড়ে যাবে। তাদের জনবল বাড়াতে হবে এবং কর্মক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন আরও জোরদার করতে হবে। ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, এবারের বাজেট মেড ইন বাংলাদেশ বাজেট’। এই বাজেট পুঁজিবাজারের জন্যেও ইতিবাচক। তিনি বলেন, তারা বিজনেস ফ্রেন্ডলি রেগুলেটর হিসেবে কাজ করছে। সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের অবদান বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে কমিশন। বিএসইসির কমিশনার প্রফেসর ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের পুঁজিবাজার যেভাবে চলছে, সেভাবে চলতে পারে না। এই বাজারের কাঠামোগত সংস্থার জরুরী। বাজারকে আরও উন্নতভাবে চলতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন নতুন প্রোডাক্ট ও নতুন স্ট্যাটেজি। বিএসইসি এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, নতুন নতুন প্রোডাক্ট চালু ও পুঁজিবাজারের স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে ইন্টার এজেন্সির (বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা) মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন। এ লক্ষ্যেও কাজ চলছে। সমন্বয় আগের চেয়ে বেড়েছে। সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানান। তাতে তালিকাভুক্ত ও তালিকার বাইরে থাকা কোম্পানির মধ্যে করের ব্যবধান বাড়বে। ভাল কোম্পানিগুলো কর সুবিধা পাওয়ার জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। ডিবিএর সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, ব্রোকারহাউসের লেনদেনে বিদ্যমান উৎসে করের হার দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ০১৫ শতাংশ নির্ধারণ করার দাবি জানান। এএমসি এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটের দিকে আগে নজর দিতে হবে। মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং অন্যান্য বিনিয়োগকে কাজে লাগানোর জন্য সমগোত্রীয় নতুন ফান্ড বাজারে আনতে হবে। আর এসব ফান্ডে প্রথম ৫ বছর করমুক্ত রাখতে হবে। ওয়েবিনারে আলোচন হিসেবে ছিলেন ডিএসই ব্রোকার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) এর সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন এবং এএমসি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হাসান ইমাম। বিএমবিএর সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান এবং সিএমজেএফ সভাপতি হাসান ইমাম এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন ওয়েবিনারে সঞ্চালনা করেন।
×