ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোমে উদ্বোধনী ম্যাচে তুরস্কের মুখোমুখি ইতালি, ছয় গ্রæপে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে ২৪টি দল, করোনার বাধা পেরিয়ে সফল আয়োজনে আশাবাদী উয়েফা

ইউরোপের বিশ্বকাপের পর্দা উঠছে রাতে

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ১১ জুন ২০২১

ইউরোপের বিশ্বকাপের পর্দা উঠছে রাতে

জাহিদুল আলম জয় ॥ ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এর চেয়ে সুখকর সময় বুঝি আর নেই। একইসঙ্গে বিশ্বের দু’দু’টি জনপ্রিয় আসর উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা। ঘাতক করোনাভাইরাসের বাধা পেরিয়ে আজ রাত থেকে শুরু হচ্ছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। আর রবিবার দিবাগত রাত থেকে মাঠে গড়াবে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ফুটবল টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকা। মজার বিষয় হচ্ছে কোপাকে বলা হয় দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ আর ইউরোকে বলা হয় ইউরোপের বিশ্বকাপ। এবার ইউরোর ১৬তম আসর। আজ রাতে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ইতালির মুখোমুখি হচ্ছে তুরস্ক। রোমের স্টাডিও অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রæপের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়। টুর্নামেন্টে ছয়টি গ্রæপে মোট ২৪টি দল প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে। প্রতি গ্রæপে থাকছে চারটি করে দেশ। ছয় গ্রæপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ১২টি দল উঠে যাবে প্রিকোয়ার্টার ফাইনাল অর্থাৎ শেষ ষোলোতে। এছাড়া ছয় গ্রæপের তৃতীয় হওয়া দলগুলোর মধ্যে সেরা চারটি দলও টিকেট পাবে রাউন্ড অব সিক্সটিনের। গ্রæপপর্বের সব ম্যাচ শেষে একাধিক দলের পয়েন্ট সমান হলে গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকা দল পরের রাউন্ডে যাবে। তাতেও সমাধান না হলে ক্রমান্বয়ে দেখা হবে- বেশি গোল করা, বেশি জয় পাওয়া, ফেয়ার প্লে অবস্থান। গ্রæপপর্বের খেলা শেষ হবে আগামী ২৩ জুন। এরপর নকআউট পর্ব শুরু হবে ২৬ জুন। শেষ ষোলোর লড়াই চলবে ২৯ জুন পর্যন্ত। এরপর কোয়ার্টার ফাইনাল হবে ২ ও ৩ জুলাই। দু’টি সেমিফাইনাল ম্যাচ হবে ৬ ও ৭ জুলাই। লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে আগামী ১১ জুলাই রাত ১টায় হবে ফাইনাল মহারণ। এবারই প্রথমবারের মতো ইউরো হচ্ছে রেকর্ড ১১টি শহরে। বাছাই পেরিয়ে চ‚ড়ান্তপর্বে উঠে আসা দেশগুলোর বেশিরভাগ দলকে এমন গ্রæপে রাখা হয়েছে যে গ্রæপের ভেন্যু তাদের শহর। যেমন-ইংল্যান্ড তাদের গ্রæপ ম্যাচগুলো খেলবে লন্ডনে। জার্মানির ম্যাচ মিউনিখে আর ইতালির মাঠে নামবে রোমে। হল্যান্ডের আমস্টারডাম, ইংল্যান্ডের লন্ডন, হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট, স্পেনের সেভিয়া, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন, রোমানিয়ার বুখারেস্ট ও স্কটল্যান্ডের গøাসগোয় হবে শেষ ষোলোর ম্যাচ। কোয়ার্টার ফাইনাল হবে রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গ, জার্মানির মিউনিখ, আজারবাইজানের বাকু ও ইতালির রোমে। আর সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হবে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে। এক বা দু’টি দেশ নয়, ইউরোপের প্রতিটি প্রান্তে ফুটবল পৌঁছে দিতে ইউরোপের ১২টি শহরে ৫১ ম্যাচের ইউরো আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে টুর্নামেন্টটি এক বছর পিছিয়ে অবশেষে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। করোনার ধাক্কা থাকলেও পরিকল্পনাতে খুব একটা পরিবর্তন আনেনি উয়েফা। বরং কঠিন পরিস্থিতিতেও মাঠে দর্শক উপস্থিতি নিশ্চিত রাখতে শেষ মুহূর্তে স্বাগতিক শহরের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন। এ বিষয়ে উয়েফার পক্ষ থেকে বলা হয়, স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতার অন্তত ২৫ শতাংশ দর্শক উপস্থিতির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে না পারার কারণেই ডাবলিনকে বাদ দেয়া হয়েছে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ইউরো মাঠে গড়ালেও শঙ্কা পুরোপুরি কাটেনি। কেননা আসর শুরুর আগেই বিভিন্ন দলে করোনা আঘাত হেনেছে। বিশেষ করে স্পেন দল এই আঘাতে রীতিমতো জর্জরিত। এরইমধ্যে ২০০৮ ও ২০১২ আসরের চ্যাম্পিয়নদের মূল দলের দুই জন খেলোয়াড় আক্রান্ত হয়েছেন। আরও খেলোয়াড়ের পজিটিভ হওয়ার শঙ্কা জেগেছে। সেই ভাবনা থেকে অপেক্ষমাণ হিসেবে আরও ১১ জন খেলোয়াড়কে দলে ডেকেছে স্পেন। ইউরোর চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। সর্বশেষ পাঁচ আসরের চারটিতেই পর্তুগীজরা কমপক্ষে সেমিফাইনালে খেলার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। এবার ট্রফি ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে মাঠে নামছে ইউরোপের ব্রাজিল খ্যাত দলটি। ২০১৯ সালে প্রথমবার আয়োজিত উয়েফা নেশন্স লীগেও চ্যাম্পিয়ন হয় পর্তুগাল। এবারের আসরে রোনাল্ডোকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে একগাদা গৌরবের রেকর্ড। এর মধ্যে প্রথম ম্যাচে মাঠে নামলেই হয়ে যাবে একটি রেকর্ড। প্রথম ফুটবলার হিসেবে পাঁচটি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার মাইলফলক গড়বেন সিআর সেভেন। ২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মূল আসরে রোনাল্ডো খেলেছেন ২১টি ম্যাচ। যে কারণে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও আরও মজবুত হবে। এছাড়া ইরানের কিংবদন্তি আলী দাইয়িকে পেছনে ফেলে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হওয়ারও সুযোগ থাকছে রোনাল্ডোর। কোন দল কোন গ্রæপে গ্রæপ-এ ॥ ইতালি, তুরস্ক, ওয়েলস, সুইজারল্যান্ড গ্রæপ-বি ॥ ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, রাশিয়া গ্রæপ-সি ॥ হল্যান্ড, ইউক্রেন, অস্ট্রিয়া, নর্থ মেসিডোনিয়া গ্রæপ-ডি ॥ ইংল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, স্কটল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র গ্রæপ-ই ॥ স্পেন, সুইডেন, পোল্যান্ড, ¯েøাভাকিয়া গ্রæপ-এফ ॥ পর্তুগাল, হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, জার্মানি।
×