ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নোয়াখালীতে পৃথক ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ২০:১৯, ১০ জুন ২০২১

নোয়াখালীতে পৃথক ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্বসংবাদদাতা, নোয়াখালী ॥ নোয়াখালীর হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নে রবিন্দ্র চন্দ্র দাস (৪৮) নামের এক ইউপি সদস্যকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। অপর দিকে, সুবর্ণচর উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কামাল উদ্দিন (৪০) নামে এক ওমান প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে বুধবার রাত ১০টার দিকে পথিমধ্যে কুমিল্লায় তিনি মারা যান। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, ‘রাতেই রবিন্দ্র চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী ময়না তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাত ২টার দিকে খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। পূর্ব বিরোধের জেরে এ হত্যাকা- হয়েছে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের। নিহত রবিন্দ্র চন্দ্র দাস চরঈশ্বর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বতিষ চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আল আমিনসহ মোটরসাইকেলযোগে চরঈশ্বর থেকে ওছখালি নিজের বাসায় আসছিলেন ইউপি সদস্য রবিন্দ্র চন্দ্র দাস। তারা চরঈশ্বর প্রধান সড়কের খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ির সামনে আসলে একদল দুর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে গতিরোধ করে। এ সময় মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা আল আমিন দৌড়ে পালিয়ে গেলেও হামলাকারীদের হাতে আটকা পড়েন রবিন্দ্র। তারা প্রথমে রবিন্দ্রকে গুলি ও পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং তার হাতের কব্জি ও রগ কেটে ফেলে। টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রবিন্দ্রের মরদেহ উদ্ধার করে। শ্রমিকলীগ নেতা আল আমিন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে আসার পথে আজাদ চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন দূর্বৃত্ত আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় আমরা মোটরসাইকেল রেখে পালানো চেষ্টা করলেও রবিন্দ্রের গায়ে গুলি লাগে। পরে তাকে ধরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।’ নিহতের বাবা স্বতিষ চন্দ্র দাস জানান, ‘রাতে বাংলা বাজার থেকে ওছখালি যাচ্ছিল রবিন্দ্র। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে ওছখালি বাসায় কল দিয়ে জানতে পারি সে বাসায় যায়নি। এর কিছুক্ষণ পর একজন মোবাইলে জানায় রবিন্দ্রকে গুলি করা হয়েছে।’ অপর দিকে, নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কামাল উদ্দিন (৪০) নামে এক ওমান প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে বুধবার রাত ১০টার দিকে পথিমধ্যে কুমিল্লায় তিনি মারা যান। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনির আহম্মদ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আলী আজ্জম প্রবাসী কামালের মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করেছেন। নিহত কামাল চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অদুমিয়ার বাড়ির অদুমিয়ার ছেলে। তিনি দেড়মাস আগে ওমান থেকে দেশে আসেন। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুরে কামাল স্থানীয় বেলায়েতের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। তার প্রতিবেশী সফি সর্দারের ছেলে মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনায় কথা কাটাকাটি হয়। পরে মাঈন উদ্দিন তার ভাই মো. রফিক, মো. ইসমাইল, মো. আহছান উল্যাহ ও ছায়েদুল হকের ছেলে জসিম উদ্দিন তুষারসহ ৭-৮ জন হামলা চালিয়ে কামালকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। ইউপি সদস্য আলী আজ্জম জানান, মাঈন উদ্দিনদের সঙ্গে কামালদের পূর্ব বিরোধ ছিল। বুধবার দুপুরে দোকানে তুচ্ছ বিষয়ে বাকবিতন্ডতার পর হামলা করলে কামাল আহত হন। পরে রাতে ঢাকা নেয়ার পথে মারা যান।
×