ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে সেভিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে বার্সা

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৪ মার্চ ২০২১

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে সেভিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে বার্সা

অনলাইন ডেস্ক ॥ শুধু জিতলেই হতো না, জিততে হতো সঠিক সমীকরণে। কঠিন সেই চ্যালেঞ্জে বার্সেলোনার দারুণ শুরুর পর পুরোপুরি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে সেভিয়া। তাতে মেসি-দেম্বেলেদের কাজটা হয়ে যায় আরও কঠিন। জিতেও হতাশায় শেষের শঙ্কা জেগেছিল। চরম নাটকীয়তায় ভরা লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত অসাধারণ এক জয়ে কোপা দেল রের ফাইনালে উঠেছে রোনাল্ড কুমানের দল। কাম্প নউয়ে বুধবার রাতে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে ৩-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। প্রথম লেগে সেভিয়া ২-০ গোলে জিতলেও দুই লেগ মিলে ৩-২ ব্যবধানে বিজয়ী প্রতিযোগিতার রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা। পেনাল্টি সেভ করে এতে বড় অবদান আছে গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের। উসমান দেম্বেলের গোলে বার্সেলোনা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জেরার্দ পিকে। আর তৃতীয় গোলটি করেন পেদ্রির বদলি নামা মার্টিন ব্রাথওয়েট। ম্যাচের প্রায় ৬৮ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে বার্সেলোনা গোলের উদ্দেশে মোট ২২টি শট নেয়। এর আটটি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে দৃষ্টিকটু রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলা সেভিয়ার ছয় শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়, সঙ্গে চার দিন আগে এই দলকেই হারানোর আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামা বার্সেলোনা ম্যাচের শুরুটা করে দুর্দান্ত। দেম্বেলের নৈপুণ্যে দ্বাদশ মিনিটে এগিয়ে যায় তারা। দেম্বেলেকে বল বাড়িয়ে ডি বক্সে ঢুকে যান মেসি। কিন্তু ফরাসি ফরোয়ার্ডকে পাসের সুযোগ দেননি সেভিয়ার খেলোয়াড়রা। খানিকটা চেষ্টা করে দেম্বেলে বুঝতে পারেন পাস দেওয়া সম্ভব নয়। ডি বক্সের বাইরে থেকে আরেকটু সরে গিয়ে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে খুঁজে নেন জাল। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের। ৩০তম মিনিটে ব্যবধান বাড়তে পারতো। তবে বাঁ দিকের বাইলাইন থেকে মেসির গোলমুখে বাড়ানো বলে পা লাগাতে পারেননি ফ্রেংকি ডি ইয়ং। দুই মিনিট পর ছয় গজ বক্সে মেসির শট এক জনের পায়ে লেগে উঁচু হয়ে ফাকা জালে জড়াতে যাচ্ছিল, শেষ মুহুর্তে ঠেকান সেভিয়া মিডফিল্ডার মার্কোস আকুনা। লা লিগায় টানা ছয় ম্যাচ জয়ের পর গত শনিবার নিজেদের মাঠে বার্সেলোনার বিপক্ষে পুরো ম্যাচেই নিজেদের খুঁজে ফেরে সেভিয়া। এ দিনও প্রথমার্ধে তারা ছিল বিবর্ণ; বিরতির আগে উল্লেখযোগ্য কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি তারা। বিরতির পরও একচেটিয়া আক্রমণ করতে থাকে বার্সেলোনা। ঘর সামলাতেই ব্যস্ত সময় কাটে সেভিয়ার। অধিকাংশ সময়ই দলটির প্রায় সব খেলোয়াড়কে দেখা যাচ্ছিল ডি-বক্সের আশেপাশে। ফলে স্বাগতিকদের সব আক্রমণ ভেস্তে যাচ্ছিল প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণে। এর মাঝে ৬৭তম মিনিটে তাদের হতাশা বাড়ে; দেম্বেলের ক্রসে জর্দি আলবার দারুণ ভলি ক্রসবারে লাগে। চার মিনিট পর প্রতি-আক্রমণে বার্সেলোনার ডি-বক্সে ঢুকে পড়া লুকাস ওকাম্পোসকে ডিফেন্ডার অস্কার মিনগেসা ফাউল করলে পেনাল্টি পায় সেভিয়া। তবে ওকাম্পোসের দুর্বল স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন টের স্টেগেন। যোগ করা সময়ের শুরুতে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সেভিয়া। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফের্নান্দো। এরপরই নাটকীয় মোড় নেয় ম্যাচ। ম্যাচ শেষ হতে তখন বাকি আর কিছুক্ষণ। মরিয়া হয়ে উঠেছে বার্সেলোনা, তাদের ঠেকিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে সেভিয়া। এমন সময় তাদের হতবাক করে সমতায় ফেরে কাতালান ক্লাবটি। বদলি অঁতোয়ান গ্রিজমানের বাঁ দিক থেকে বাড়ানো ক্রসে হেডে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান পিকে। অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিটে ফাইনাল নিশ্চিত করা গোলটি করেন ব্রাথওয়েট। আলবার গোলমুখে বাড়ানো ক্রসে বদলি নামা ডেনিশ ফরোয়ার্ডের হেডে বল গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক গলে ঠিকানা খুঁজে পায়। বাকি সময়েও একইভাবে চাপ ধরে রেখে ফাইনালে পা রাখে বার্সেলোনা। শিরোপা লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ অন্য সেমি-ফাইনালে লেভান্তে ও আথলেতিক বিলবাওয়ের মধ্যে বিজয়ী।
×