ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কেউ গাফিলতি করলে সহ্য করা হবে না ॥ সেতুমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ৫ ডিসেম্বর ২০২০

কেউ গাফিলতি করলে সহ্য করা হবে না ॥ সেতুমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ॥ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে (সওজ) নিয়ে দুদক তদন্ত করলে আমি কষ্ট পাই, এটা শুনতে চাই না।প্রকৌশলীরা আপনারা কাজে মনযোগ দেন। কেউ গাফিলতি করলে সহ্য করা হবে না। আমি দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই।’ আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির ১ম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন-২০২০ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বৃষ্টির কথা ভেবে কাজ ফাঁকি দিয়ে বসে থাকবেন, সেটা নিয়ে বসে থাকলে হবে না। বছরে ৮-৯ মাসই বৃষ্টি থাকে। যুক্তরাজ্যে যে আবহাওয়ায় সড়ক নির্মাণ করা হয়, সেটা অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। ‘সড়কে একটা গর্ত থাকলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে মেরামত করে দেবেন, তাহলে সেটা বড় হবে না। আমি সব জানি, কে কী করেন। ফাঁকিবাজির সুযোগ আর নেই। কাজ না করলে নিজের ক্যারিয়ার নষ্ট করবেন, নিজেকে ঠকাবেন। সুতরাং কেউ ফাঁকিবাজি করবেন না। ’ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, রাস্তায় কাজ ভালো না হলে দায় কেউ এড়াতে পারেন না। ঠিকাদার যদি নিম্নমানের কাজ করে, তাহলে দায় কিন্তু প্রকৌশলীর। কারণ প্রকৌশলী তার দায়িত্ব পালন করেননি যথাযথ ভাবে। এটা বন্ধ করতে হবে। প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বেতন ভাতা পাচ্ছেন গরীব মানুষের ট্যাক্সের টাকায়। দেশের প্রতি অনেক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেটা যথাযথ ভাবে পালন না করলে নিজেকে ঠকাবেন। ‘গুণগত মান নিশ্চিত করা বাদ দিয়ে যদি নিজের পকেটের চিন্তা করেন, তা হলে দেশ এগিয়ে যাবে না। ভালো কাজের জন্য পুরস্কার, খারাপ কাজের জন্য তিরস্কার। সওজে এটা শাস্তির বিধান না থাকলে গুণগত মান নিশ্চিত হবে না। এ ধরনের ফাঁকিবাজি করলে নিজেকে ঠকাচ্ছেন। দেশকে ঠকাচ্ছেন। সারা জীবনের জন্য দুর্নাম করে গেলেন। ’ তিনি বলেন, আমি মন্ত্রী, কারো কাছ থেকে কখনো পদন্নোতি ও কাজের জন্য ১০ টাকা নিইনি। কোনো স্বজনপ্রীতি বরদাশত করি না। মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতিতে টাকার খেলা বন্ধ করেছি। যেখানে আমি সৎ। সেখানে প্রকৌশলীদের সৎ থাকতে সমস্যা কোথায়। একসময় টাকা নিয়ে প্রধান প্রকৌশলী পদোন্নতি দেওয়া হতো, সেটা আমি বন্ধ করেছি। জ্যেষ্ঠতা ছাড়া কাউকে পদোন্নতি দিই না। কেউ যদি ৫ দিনের জ্যেষ্ঠ হন, তাকে ৫ দিনের জন্য হলেও প্রধান প্রকৌশলী বানিয়েছি। তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করিনি। একসময় আমার দল করতেন, তাই বলে সুবিধা দেবো, এটা হবে না। কাজ করতে হবে। এটার মূল্যায়ন করা হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সমৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকৌশলীদের ভূমিকা রয়েছে। প্রকৌশলীদের পেশাগত উন্নয়নে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় আন্তরিক ভাবে কাজ করছে। এই মন্ত্রণালয় কোথায় ছিল, আজ কোথায় এসেছে। আমূল পরিবর্তন হয়েছে। সওজের বিশাল কার্যালয় হয়েছে। আধুনিক সড়ক ও সেতু ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণ নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ কমাতে পারিনি। তবে করোনার কারণে কমেছে। বড় অফিস না করে সড়কের উন্নয়নে, শৃঙ্খলায় কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এক্সেল লোড স্থাপন করতে প্রধান প্রকৌশলীকে বলেছি। বলেছি এটা আপনার একমাত্র কাজ। কিন্তু কাজ হয়নি, সেটা মুখেই রয়েছে। লোড স্থাপন না থাকায় অতিরিক্ত মাল বোঝাই গাড়ি চলাচলে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। বহু সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এখন সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। আমাদের প্রকৌশলীরা অনেক দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ করছে, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অষ্টগ্রাম ও মিঠামইন সড়ক সেই দৃষ্টান্ত। সড়ক নির্মাণে ডিজাইনে ক্রটি রয়েছে। আরিচা মহাসড়কে কাজে গুণগত মান নিশ্চিত হয়নি। গুণগত মান নিশ্চিত না হলে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রকৌশলীদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সময়োপযোগী টেকসই উন্নয়ন। এখানে যে মেধাবী প্রকৌশলীরা রয়েছেন, তাদের মেধা কাজে লাগালে টেকসই উন্নয়ন হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন বলেন, গুণগত মান বজায় রেখে সড়ক নির্মাণ করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে প্রকৌশলীরা তদারকি করে সড়কের কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। টেকসই উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী সড়ক নির্মাণ করতে হবে। সময় এসেছে সড়ক নির্মাণে উন্নত উপকরণ ব্যবহারের। সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি মো. আব্দুস সবুরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসাইন। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
×