ভ্রমণ ব্যাকরণ : কাপ্তাই
আইউব সৈয়দ
কাপ্তাইয়ের ব্যক্তি স্বাধীনতার ঝিঁঝি গান ডানা মেলে উড়ে। ‘ইজোর ’-এর
চালাঘরে-লেকের ধূসর-ধোঁয়ার মিথ ভাংচুর করেই রঙ্গনেতে সাজায়-
পাহাড়কোল, আহা... লংশটে দেখি ফাউজুল-জহিরের কথোপকথনে
‘মোনালিসা’র দেহছায়া খুশিরং চালানে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য আলো
স্মৃতির দিগন্তে ফিরে। জানি হে, জানি হে-কাপ্তাই মানে বাইপাস, ‘বড়দাম’-
মানে ভ্রমণ। ভ্রমণই অরণ্যসোহাগ; জীবনমুখী দষ্টিপাত এলিয়ে পড়েছে
কলার মোঁচায়
লেবু... পেঁপে... তিসি... জানে না জ্বলজ্বল স্বপ্নের ইতিকথা। লেবুদেহে সবুজ ভাষা আর
পাকা পেঁপে হয় বৈকালিক পথ। পথ, তুমি কী কাপ্তাইয়ের বাইপাস? তিসি,
তুমি কী সংঘবদ্ধ শোঁকাশুঁকি?
ওহ... কাপ্তাই সবুজায়নের হাততালি। বাইপাস কাপ্তাইয়ের ব্যাকরণ
যাপনচিত্রের চকিত সংলাপ এবং অনির্ণেয় ভ্রমণ...
** অমীমাংসিত দাবি
ফখরুল হাসান
হে তরুণ, কৃষাণীর বাতিল পাতিলের মতো
পরিত্যক্ত ঘোষণা করো সুবিধাবাদের জনসভা।
তোমাদের করতেই হবে। কারণ, নৈতিকভাবে দুর্বল
ভীরু-অসাহসী সেজেছে মূলমঞ্চের বক্তাগণ!
প্রশ্ন আসে আমাদের মনে এভাবে কি ঝুঁকিমুক্ত
কখনো থাকা যায়? হয়তো যায়।
বকেয়া বা গর্বের ফেলে আসা জন্মের অমীমাংসিত
বিষয় নিয়ে কেন আমাদের পথে নামতে হবে?
ফায়দাপ্রাপ্ত ও বেনিফিসিয়ারিগণ প্রশ্নটিকে
আড়াল করেছে বারবার, কি বিচিত্র ধোঁয়াশা!
ক্রোধের চিহ্নমাখা মুখ ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে
আর কতকাল অপ্রাপ্তির শোভাযাত্রায় যুক্ত হবে?
আমাদের জন্মের প্রাচীন ইস্যুটিকে সামনে এনে
বন্ধ করে দাও মূর্খদের আস্ফালন ও হুঙ্কার।
** শূন্যতা বড় ছোঁয়াচে!
শেখ আতাউর রহমান
(‘ঊীরংঃবহঃরধষরংস ধং ঊসঢ়ঃুহরংস’: ঔবধহ চধঁষ ঝধৎঃৎব)
রাত এখন দুইটা সাঁইত্রিশ
দূরদর্শনে ‘মুখার্জী দাদার বউ’ ছবিটা শেষ হলো এই মাত্র
শাশুড়ি আর পুত্রবধূর অতি পুরাতন দ্বন্দ্বের কাহিনী
শুরু থেকে দেখিনি বলে পরিচালকের নামটা জানা হয়নি
অভিনয় করলেন সবাই চমৎকার! বেশ!
আমার প্রিয় অভিনেত্রী অপরাজিতা আঠ্যার (?) মনে রাখবার মতো
অভিনয়-তাঁর প্রতিভার কাছে ‘অভিনয় শিল্পকলা’ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়!
আমার চেতনাকে মুহুর্মুহু : আঘাত করে এই ছবি
আমিও তো আঘাত করি ঘরণীকে কটু উচ্চারণে
তিনিও আমাকে প্রত্যাঘাত করেন প্রচণ্ড অভিমানে
নিত্যদিন পাশাপাশি বাসকরে অবশেষে মেলে এই শূন্যতা?
দুজন দুজনার কাছে জীর্ণ হয়েছি বলে এই বৈরিতা?
তবু মাঝে মাঝে কেন ডুকরে কেঁদে ওঠে মন?
এই যেমন এখোন-রজনী নিভৃত যখোন
তিন ভাইয়ের একমাত্র আদুরে বোন-তার ওপর সুন্দরী, অপরূপা প্রায়!
এ-সেন্টিমেন্ট কি সহজে লুকিয়ে রাখা যায়?
‘রৌদ্রছায়া’ ছেড়ে যখোন বহুদূরে যাই-নিঃসঙ্গতায় নিজেকে হারাই
মোবাইলে তাঁকে খুঁটে খুঁটে দেখি-ঝলমলে অতীতটা হাতড়ে বেড়াই!
আজ তিন কন্যা চলে গেছে ‘রৌদ্রছায়া’ ছেড়ে-বহুদূরে
এখোন ২৭শ’ বর্গফুটের খাঁ খাঁ দ্বিতল ভবন-দুজনায় বাস করি পাশাপাশি
কিন্তু কোথা থেকে জানি শালিকের মতো দুজনার মাঝে বাসা বাঁধে শূন্যতা আসি!
কাছে, অথচ কতো দূরে!-দুই ক্লান্ত শিখা-পাইনা কো দিশা!
‘এ্যালোন ইন্ দা এন্টার্টিকা!’
রোদেলা দুপুরে দোয়েল চড়ুই কাক-ডাকে, কা! কা!
তখোন হুহু করে ওঠে মন-কি শূন্য দ্বিতল ভবন!
বিষাদের মেঘে ছেয়ে যায় তামাম ভুবন!
তাই, আনকোরা নতুন ব্লেডে একটা একটা করে ‘প্যাশন’ এর নার্ভগুলো
কেটে দেয়া ছাড়া আর কিছু করণীয় আছে?
আছে! রাত জাগার পুরস্কারে বুকের শূন্যভাঁড়ার বিষণ্নতার বুদবুদে এতোক্ষণে
কানায় কানায় ভরে গেছে!
ঘাড় তুলে দেখি এক ল্যাজারস-কাঁদেও না, হাসেও না-মিররের কাঁচে!
শূন্যতা বড় ছোঁয়াচে!!