ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

এবার পরীক্ষার বদলে লটারিতে স্কুলে ভর্তির চিন্তাভাবনা

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ২৫ নভেম্বর ২০২০

এবার পরীক্ষার বদলে লটারিতে স্কুলে ভর্তির চিন্তাভাবনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনার মধ্যে নতুন শিক্ষাবর্ষে স্কুল ভর্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। দুপুর ১২টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বাদে সংযুক্ত সরকারী মাধ্যমিক ও সব বেসরকারী স্কুলে ভর্তির বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিকে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে শূন্য আসনে ভর্তিতে পরীক্ষার পরিবর্তে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করে ভর্তি করতে নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। এই লটারি প্রক্রিয়ার সময় অভিভাবকরা উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তবে অভিভাবক প্রতিনিধিসহ ভর্তি কমিটি গঠন করে লটারির কার্যক্রম পরিচালনা হবে। চলতি সপ্তাহেই এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হতে পারে। প্রথম শ্রেণীর ভর্তি লটারিতে ও দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষার মাধ্যম ভর্তি করা হয় প্রতিবছর। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। অনলাইনে ভর্তি ফরম বিক্রি করা হবে। এরপর যাচাই-বাছাই করে লটারির জন্য নির্বাচন করবে কর্তৃপক্ষ। একাধিক ধাপে লটারি করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এর ফলাফল বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। তবে জনসমাগম এড়াতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অভিভাবকদের প্রবেশের সুযোগ থাকবে না। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও কয়েকজন অভিভাবক নিয়ে ভর্তি কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। সন্তানের ভর্তি লটারিতে অভিভাবকদের উপস্থিত হওয়ার সুযোগ না পেলেও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ভর্তির জন্য আবেদনকারী অভিভাবকদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে পাঁচ থেকে সাতজনকে নির্বাচন করা হবে। তাদের অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে ভর্তি কমিটিতে যুক্ত করা হতে পারে। এছাড়া ভর্তি নীতিমালায় নতুন কোন পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মমিনুল রশিদ বলেন, বেসরকারী স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে সকল স্তরে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। করোনার ঝুঁকি থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে এ পদ্ধতিকে বেছে নেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে ভর্তি নীতিমালা জারি করা হতে পারে। তিনি বলেন, ঝুঁকি এড়াতে এবার ভর্তি কার্যক্রমে অভিভাবকদের উপস্থিত থাকতে নিষেধ করা হবে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কয়েকজনকে নির্বাচন করে অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত রেখে লটারি কার্যক্রম পরিচালনা করা হতে পারে। ভর্তি নীতিমালায় এসব বিষয় যুক্ত করা হবে। আর কোন পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। জানা গেছে, এর আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে করোনার ছোবলের কারণে নতুন শিক্ষাবর্ষে বেসরকারী মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে পরীক্ষার পরিবর্তে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রস্তাব করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। এমনকি এক্ষেত্রে এবার পঞ্চম ও অষ্টমে সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় অন্যান্য শ্রেণীর মতো ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণীতেও লটারির মাধ্যমে ভর্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোঃ গোলাম ফরুক সাংবাদিকদের বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ভিন্নভাবে ভর্তির পথে যেতে হচ্ছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি সিদ্ধান্ত নেয় তার পরে বলা যাবে আসলে কিভাবে ভর্তি হবে। মাউশির কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা যেতে পারে। ক্লাস অনুযায়ী নয় ধাপে এ লটারির আয়োজন করতে বলা হয়েছে। নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সরকারী ও বেসরকারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। সেখানে একাধিক প্রস্তাব আসে। এর মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সারাদেশে ৬৮৩ সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শুধু রাজধানীতে আছে ৪২। বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে সাড়ে ১৯ হাজার। এগুলোর মধ্যে ১৬ হাজার ৭৭৫টি এমপিওভুক্ত, বাকি দুই হাজার ৬৪৬টি নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
×