ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লালমনিরহাটে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বাড়ির সামনে আন্তর্জাতিক মহা সড়কে লাশ নিয়ে ৪ ঘন্টা অবরোধ

প্রকাশিত: ২০:৪০, ২৭ অক্টোবর ২০২০

লালমনিরহাটে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বাড়ির সামনে আন্তর্জাতিক মহা সড়কে লাশ নিয়ে ৪ ঘন্টা অবরোধ

নিজস্ব সংবাদদাত, লালমনিরহাট ॥ জেলার কালীগঞ্জে মামলাবাজ নারী তামান্নার গ্রেফতার দাবিতে নিহত খলিলের মরদেহ নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বাড়ির ফটকে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে কয়ে শতাধিক গ্রামবাসী। এদিকে অবরোধের কারণে সফরে আসা সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ৪ ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও মন্ত্রীর বাড়ির ফটকে লালমনিরহাট-বুড়িমারী আন্তর্জাতিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন গ্রামবাসী। নিহত দিনমজুর খলিল মিয়া (৩৪) কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কাশিরাম গ্রামের আবদার মুন্সির ছেলে। অবরোধকারী গ্রামবাসী জানান, উপজেলার কাশিরাম গ্রামের বজলে রহমান মোস্তাজিরের মেয়ে স্থানীয় উত্তর বাংলা কলেজের প্রভাষক এস তাবাসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না(৪৩) ঠুনকো বিষয় নিয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলা ও পুলিশী হয়রানি করে গ্রামবাসীকে জিম্মি করে রেখেছেন। তার হয়রানির প্রতিবাদে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা আমলে না নিয়ে উল্টো তামান্নার মিথ্যা মামলা গ্রহণ করে প্রায় অর্ধশত নিরীহ গ্রামবাসীকে হাজতবাস করিয়েছেন। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানি করে আসছেন তামান্না। তার হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে গ্রামবাসী একাধিকবার গণপিটিশন দিয়েও প্রতিকার পায়নি। তামান্নার দায়ের করা একটি মিথ্যা মামলায় ওই গ্রামের দিনমজুর খলিল মিয়া আদালতে যাওয়ার পথে অটোরিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে লালমনিরহাট থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসাধীন থেকে সোমবার (২৬ অক্টোবর) মারা যান। এতে ফুসে ওঠে পুরো এলাকাবাসী। প্রভাষক তামান্নার গ্রেফতার, কালীগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদের প্রত্যাহারসহ তামান্নার দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মৃত খলিলের মরদেহ নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বাড়ির ফটকের সামনে মরদেহ নিয়ে মানববন্ধন করে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে অবরোধ তুলে নিতে ২/৩ ঘণ্টা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর আলম। এতে মহাসড়কের উভয় প্রান্তে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। ভোগান্তিতে পড়ে এ মহাসড়কের যানবাহনে থাকা যাত্রীরা। এসময় দুই দিনের সফরে আসা সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের গাড়ি বহরও আসতে দেরি হয়। দীর্ঘ যানজট পার করে ৩ ঘণ্টা পরে মন্ত্রীর গাড়ি বাড়ির সামনে পৌঁছালে মন্ত্রী তাদের দাবি ভেবে দেখার আশ্বাস দিলেও তারা মহাসড়ক ছেড়ে দেয়নি। অসুস্থ মন্ত্রীকে বাড়িতে প্রবেশের সুযোগ দিলেও অবরোধ সচল রাখেন গ্রামবাসী। অবশেষে দুপুর ২টার দিকে অবরোধকারী গ্রামবাসীর কয়েকজনকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। এ সময় গ্রামবাসীর দাবিগুলো শুনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তামান্নার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দাখিল করা অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় গ্রামবাসী। নিহেতে পরিবারের দাবি সে মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়ে মারা গেছেন।
×