ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাইকারিতে দাম কমেছে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

তিনদিনের মধ্যে খুচরা বাজারে নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হবে

প্রকাশিত: ২২:৩০, ২৩ অক্টোবর ২০২০

তিনদিনের মধ্যে খুচরা বাজারে নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোল্ড স্টোরেজ হয়ে পাইকারি বাজারে কমে আসছে আলুর দাম। পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা গুদাম থেকে আলু ছাড়তে শুরু করেছেন। তবে খুচরা বাজারে আগের বাড়তি দাম ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি আলু। আগামী তিন দিনের মধ্যে খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, আলুর দাম কোল্ড স্টোরেজে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ছিল। সেটা বৃহস্পতিবার ২৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যেটা ২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আমরা খুব আশাবাদী শীঘ্রই নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, আলুর দাম কমানোর চেষ্টা চলছে। এটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। এটা কৃষি মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা ইচ্ছে করেই এসেছি যে টিসিবির মাধ্যমে ২৫ টাকা দরে বাজারে আলু ছেড়ে ভোক্তাদের সহযোগিতার জন্য। তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে দামের বিষয়ে। পেঁয়াজ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কোন অবস্থাতেই ৫৫ টাকার নিচে নামবে না। এই দামের ওপরই আমাদের চলতে হবে আগামী বছর পর্যন্ত। তিনি বলেন, বছরে ৮ থেকে ৯ লাখ টন পেঁয়াজের ঘাটতি থাকে। সেটা সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আসে। ভারতের পেঁয়াজের বড় অংশ এ সময় আসে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ তাই এবার মিসর, তুরস্ক, ইরান, চীন, মিয়ানমার থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে আমদানি খরচ পড়ে ৪৫ টাকা কেজি। এরপর ৫ থেকে ৬ টাকা ভ্যাট রয়েছে। ফলে পাইকারিতে কমপক্ষে ৫০ টাকা পড়ে। তাই ৬০ থেকে ৬৫ টাকার নিচে আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারজাত করা যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি ৬০ টাকার নিচে রাখতে। যাতে করে সর্বনিম্ন মুনাফা করা যায়। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা খারাপ দিক। তবে ভাল দিক হলো, আমাদের কৃষকরা কিন্তু টাকা পাচ্ছে। তারা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পাচ্ছে। যা সামনে আরও বেশি করে উৎপাদন করতে উৎসাহ জোগাবে। ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত ॥ ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিকভাবে ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিমাণ অন্য যে কোন দেশের চেয়ে বেশি। আর এ কারণে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি (হাইকমিশনার) বলেছেন রফতানি আরও পাঁচগুণ বাড়লেও কোন সমস্যা তৈরি হবে না। উভয় দেশ ব্যবসা-বাণিজ্যে পার্টনার হতে চাই। প্রাথমিকভাবে অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ছোট ছোট কিছু সমস্যা রয়েছে। খুব শীঘ্রই এসব সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বিষয় নিয়ে একটি ডিজিটাল জাদুঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিশেষ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এছাড়া বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত এলাকায় স্থাপিত বর্ডার হাটগুলোতে উভয় দেশের মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। আরও তিনটি বর্ডার হাট উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। প্রতিলিটারে ভোজ্যতেলে দাম ২ টাকা কমানোর ঘোষণা ॥ দেশের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীগণ দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিলিটার সয়াবিন তেল এবং পামওয়েল দুই টাকা কমে বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নিয়মিত পর্যালোচনার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত ॥ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আলু, চাল, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেলসহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ সময় বিভিন্ন অপরাধে ১৩৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয় নিত্যপণ্য যৌক্তিক মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে কি না তা মনিটরিং করা হয়।
×