ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ক্ষমতা ছাড়ব না

প্রকাশিত: ২০:১৪, ১৭ অক্টোবর ২০২০

ক্ষমতা ছাড়ব না

থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। জরুরী অবস্থা উপেক্ষা করে শুক্রবার সকাল থেকে হাজার হাজার তরুণ রাস্তায় নেমে আসে। এ সবের মধ্যেও ক্ষমতা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা। শুক্রবার সকালে জরুরী মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন থাই প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিক্ষোভ দমনে সব ক্ষমতা প্রয়োগ করা হবে। আমি ক্ষমতা ছাড়ছি না। প্রায়ুথ চান ওচা বলেন, বিক্ষোভ প্রশমনে সরকার জরুরী আইনের সব ধারা প্রয়োগ করতে দ্বিধা করবে না। তিনি বলেন, দেশের পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, তিন মাস ধরে চলা আন্দোলন প্রশমনে ৩০ দিনেরও কম সময় লাগবে। খবর আলজাজিরা ও ব্যাঙ্কক পোস্ট অনলাইনের। প্রসঙ্গত, থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচার পদত্যাগের দাবিতে জুলাই মাস থেকে আন্দোলন চলছে। তবে এ আন্দোলন শুধু প্রায়ুথ চান ওচা নন দেশটির রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের জন্যও চ্যালেঞ্জ। কারণ থাই রাজার বিরুদ্ধে দেশটিতে বিক্ষোভের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। তবে বৃহস্পতিবার রাজা ভাজিরালংকর্নের স্ত্রীর গাড়ির সামনেও বিক্ষোভ হয়। অনেক তরুণ রাজার স্ত্রীকে বহনকারী গাড়ির দিকে তেড়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে কার্ফ্যু জারি করে থাই সরকার। পাঁচ কিংবা তার অধিক মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন খবর প্রকাশ কিংবা অনলাইন মেসেজের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ একটি ডিক্রি জারি করে সরকার। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ ছিল খুবই প্রয়োজনীয়। একাধিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ গণতন্ত্রপন্থী অন্তত ২০ নেতাকর্মীকে আটক করে। জরুরী অবস্থার আওতায় পুলিশ ৩০ দিন পর্যন্ত কোন অভিযোগ ছাড়াই লোকজনকে গ্রেফতার করতে পারবে। এ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক এক বিবৃৃতিতে আটককৃতদের মুক্তি দাবি করে। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। সাবেক সেনাপ্রধান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এছাড়া বিক্ষোভকারীরা নতুন সংবিধান দাবি করেছে এবং দীর্ঘদিনের নীতি ভেঙে রাজার ক্ষমতা কমানোরও আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে জরুরী অবস্থা কার্যকর হয়। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বিক্ষোভের প্রধান নেতা চিওয়ারাক, পানুসায়া সিথিজিরাওয়াত্তানকুল এবং মানবাধিকার আইনজীবী এ্যানন নামপা ও পারিত রয়েছেন। আগস্ট মাসে থাই রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনসমক্ষে প্রথমবার সমালোচনা করে এবং প্রথাগত ধারার সংস্কারের দাবি তুলে আলোচনায় আসেন এ্যানন নামপা। ওই মাসের শেষদিকে রাজতন্ত্রের নিয়ম সংস্কারের ১০ দফা দাবি পেশ করেন পানুসায়া। বৃহস্পতিবার সকালে থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচার জরুরী অবস্থা জারি সংক্রান্ত আদেশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। জরুরী অবস্থা জারির পর থেকে ব্যাঙ্ককের রাজপথ শত শত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু এসব উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই রাস্তায় নেমে আসে তরুণরা। আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিয়েছে তারা। ছাত্র-আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠা ‘তিন আঙ্গুল স্যালুট’ প্রদর্শন করেছে অনেকেই। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ঘিরে দাঁড়ায় এবং ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হওয়াসহ পুলিশকে ধরপাকড় করতেও দেখা গেছে।
×