ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বোস্টন ভার্সিটির গবেষণা

করোনায় মৃত্যুঝুঁকি ৫২ শতাংশ কমায় ভিটামিন ডি

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

করোনায় মৃত্যুঝুঁকি ৫২ শতাংশ কমায় ভিটামিন ডি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চীন জানিয়েছে, তারা বছরে ১০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করবে। যদিও বোস্টন বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় মৃত্যুর ঝুঁকি ৫২ শতাংশ কমাতে পারে ভিটামিন ডি। আর জনসন এ্যান্ড জনসনের মতে, তাদের তৈরি ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম। বিশ্বে গত সাতদিনে করোনা আক্রান্তের হিসাব থেকে জানা গেছে, বিশ্বের প্রতি ২৫০ জনের মধ্যে একজন করোনা আক্রান্ত। অন্যদিকে ইরানে ৫৫ দিন পর করোনায় রেকর্ড দুই শ’র বেশির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ভারতে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, এএফপি, রয়টার্স ও ওয়ার্ল্ডোমিটার ডট ইনফোর। ওয়ার্ল্ডোমিটারের মতে, সারাবিশ্বে শনিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন কোটি ২৯ লাখ ৫৪ হাজার ২০৩ জন। মারা গেছেন ৯ লাখ ৯৬ হাজার ২৯৯ জন। সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৫৬৬ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৩১ জন; যাদের মধ্যে ৬৩ হাজার ৯৩৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন তিন লাখ ১৭ হাজার ৯৫২ জন। মারা গেছেন পাঁচ হাজার ৮১৮ জন। এদিকে চীন করোনার সম্ভাব্য টিকার প্রতিবছর ১০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। দেশটির এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছে, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে আগামী বছর ১০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জিত হবে। এই লক্ষ্যে নতুন নতুন কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের ঝেং জংওয়েই জানান, এই বছরের শেষদিকে ৬ কোটি ১০ লাখ ডোজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। আগামী বছর আমাদের সক্ষমতা ১০০ কোটি ডোজ ছাড়িয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মা জায়ান্ট ফাইজার ও মডার্নার পক্ষ থেকেও ২০২১ সালে ১০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ঝেং জানান, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার আগে অগ্রাধিকার শ্রেণীকে যেমন, চিকিৎসাকর্মী, সীমান্তরক্ষী ও বয়স্কদের টিকা দেয়া হবে। প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় জনসনের ভ্যাকসিন ॥ করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে বৃহত্তম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জনসন এ্যান্ড জনসন। যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিসরে ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চালাচ্ছে সংস্থাটি। জনসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তাদের ভ্যাকসিন শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। শুক্রবার সংস্থাটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফলাফল অনুযায়ী, করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের প্রথম এবং দ্বিতীয়; দুই ধাপেই আশানুরূপ ফল এসেছে। দুটি ধাপেই দেখা গেছে, ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে কার্যকর। মৃত্যুঝুঁকি কমায় ভিটামিন ডি ॥ যারা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন তাদের কোভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত্যুঝুঁকি ৫২ শতাংশ কম। নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বোস্টন ইউনিভার্সিটির ড. মাইকেল হোলিক ও তার দল এই গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। তেহরানের এক হাসপাতালে চিকিৎসারত দুই শতাধিক কোভিড রোগীর শরীর থেকে নেয়া রক্তের নমুনা পরীক্ষা শেষে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা। প্রতি ২৫০ জনের একজন করোনা আক্রান্ত ॥ গত সাতদিনে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ২২ লাখ বেড়েছে। এই সংক্রমণের হার বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। সংক্রমিতদের মধ্যে গুরুতর রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে এদের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ হয়েছে। এই রোগীর সংখ্যা সংক্রমিতদের সার্বিক হিসাবের ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ। করোনামুক্ত হওয়ার হার প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। গত ৭ দিনে এই হার ৬৮ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ৬৯ শতাংশ হয়েছে। এ সময়ে মোট করোনামুক্ত হয়েছে ১৭ লাখ রোগী। গত ৭ দিনে করোনাজনিত কারণে প্রায় ৩৭ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর হার কমে ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আপেক্ষিক বিবেচনায় বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী। কিন্তু গত ৭ দিনে সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এই হার ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ইরানে রেকর্ড মৃত্যু ॥ প্রায় ৫৫ দিন পর ইরানে একদিনে রেকর্ড ২০৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর আগে দেশটিতে সর্বশেষ গত ১ আগস্ট ২১৬ জনের প্রাণ কাড়ে করোনা। শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সীমা সাদাত লারি বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে করোনায় নতুন মারা গেছেন ২০৭ জন। মোট মৃত্যু বেড়ে ২৫ হাজার ২২২ জনে পৌঁছেছে। নতুন রোগী শনাক্তের হারও আগের চেয়ে বেড়েছে। ভারতে আরও ১০৮৯ মৃত্যু ॥ করোনা মহামারীতে এশিয়ায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে এক হাজার ৮৯ জন মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত এ রোগে মারা গেছেন ৯৩ হাজার ৩৭৯ জন। একদিনে ৮৫ হাজার ৩৬২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
×