কবি ক্লড ম্যাককে ও তাঁর একটি কবিতা
অনুবাদ : তূয়া নূর
১৯১৯ সালের সামারের ঘটনা। এক কালো কিশোর মিশিগান হ্রদে সাঁতার কাটতে নেমেছিল। জায়গাটা ছিল কালোদের জন্য নিষিদ্ধ। এ নিয়ে শুরু হয় সাদা কালো দাঙ্গা। ১৩ দিন ধরে চলে মিশিগান, ইলিনয়, নিউইয়র্কসহ কয়েকটা শহরে। প্রাণহানি ঘটে। রক্তপাত হয় প্রচুর। তাই এই সামারটাকে বলা হয় রেড সামার।
এর প্রতিবাদে ক্লড ম্যাককে (১৮৮৯-১৯৪৮) লিখলেন কবিতাটা ‘ ওভ ডব গঁংঃ উরব’। কবিতাটা ‘ঞযব খরনবৎধঃড়ৎ’ এর ১৯১৯ এর জুলাই সংখ্যাতে ছাপা হয়। পরের বছর ছাপা হয় লন্ডনের একটা পত্রিকায় ম্যাসাচুসেটসের রিপাবলিকান সিনেটর হেনরি লজ কংগ্রেসে এই কবিতাটা পড়ে শুনিয়েছিলেন। আর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কমনস সভায় এই কবিতাটা আবৃত্তি করেছিলেন।
মূল কবিতাটা কবি শেক্সপিয়ার অনুসৃত সনেট রীতিতে লেখা। সনেট বাংলাতে চৌদ্দ মাত্রা ও আঠারো মাত্রায় লেখার প্রচলন আছে। অনুবাদ কবিতাটার অন্ত্যমিল মূল কবিতার মতো রাখা হয়েছে। বিন্যস্ত করা হয়েছে ১০+৮ মোট ১৮ মাত্রার লাইন অক্ষরবৃত্তের হিসাবে।
কবিতা সামাজিক অসাম্য নিয়ে লেখা। সামাজিক অসাম্য, বর্ণ, গোত্র ভেদাভেদের বিরুদ্ধ লড়াই করার সাহস জোগাবে এই কবিতা সব সময়।
** মরতে যদি হয়
মূল : ক্লড ম্যাককে
মরতে যদি হয় সে মৃত্যু না হোক শূকরের মতো
কাদা মাটিতে কোণঠাসা করে শিকারি শিকারে রপ্ত,
ঘিরে ধরে ঘেউ ঘেউ করে পাগলা কুকুরের মতো,
উপহাস করে বলে দেয় ভাগ্য যেন অভিশপ্ত।
মরতে যদি হয় তবে যেন মহৎ হোক মরণ,
ঝরা দামী রক্ত বিফলে না যায় হোক সে অম্লান;
দানবের মুখোমুখি যুদ্ধে মৃত্যুকে করি বরণ
নতশিরে বাধ্য হয়ে তারা জানাবে ঠিক সম্মান।
সামনে সবার একটাই শত্রু শুনে রেখো পুত্তর!
অধিক সংখ্যায় তারা আমরা মাঠে লড়বো জবর,
একটা মৃত্যুই হবে তাদের দেখো জুতসই উত্তর!
তাতে কী, সামনে পড়ে আছে খোঁড়া বিস্তীর্ণ কবর?
কাপুরুষ খুনিদের দল, এসো তাদের তাড়ায়,
দেয়ালেতে পিঠ, সামনে মৃত্যু, তবুও ঘুরে দাঁড়ায়!
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: