ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আমিরাতে বিমানের নতুন সিডিউল ঘোষণা

বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট ও যাত্রী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেনি ইতালি

প্রকাশিত: ২২:৫০, ১২ জুলাই ২০২০

বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট ও যাত্রী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেনি ইতালি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা মহামারীতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ফের দুবাই ও আবুধাবি রুটে ফ্লাইট পরিচালনার নতুন সিডিউল ঘোষণা করেছে। নতুন সিডিউল অনুযায়ী আগামীকাল ১৩ জুলাই থেকে দুবাই রুটে এবং ১৪ জুলাই থেকে আবুধাবি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে। বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার জানান, বিজ্ঞপ্তিটির বিস্তারিত বিমানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বিমান জানিয়েছে, ১৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া বাণিজ্যিক সিডিউল ফ্লাইট ঢাকা-দুবাই-ঢাকা রুটে সপ্তাহে ৩ দিন পরিচালিত হবে। দিনগুলো হচ্ছে সোমবার, বৃহস্পতিবার ও শনিবার। অপরদিকে ১৪ জুলাই থেকে ঢাকা-আবুধাবি-ঢাকা রুটে শুরু হওয়া বাণিজ্যিক সিডিউল ফ্লাইট সপ্তাহে তিনদিন পরিচালিত হবে। দিনগুলো হলো মঙ্গলবার, বুধবার এবং শুক্রবার। এসব ফ্লাইটে ভ্রমণকারী ভিজিট ভিসাধারীদের কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট অবশ্যই লাগবে। এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশে বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের নাগরিকদের বেলা করোনা নেগেটিভ সনদ আবশ্যক করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশী যাত্রীদের এ দেশটিতে যেতে হলে নেগেটিভ সনদ আবশ্যক। গত ৭ জুলাই থেকে পর্যটকদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত উন্মুক্ত করা হয়েছে। পর্যটকরা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশটিতে ভ্রমণ করতে পারবেন। ইতালি ফ্লাইট চালু ১৪ জুলাইয়ের পর ॥ এদিকে ইতালিতে ফের ফ্লাইট চালু হচ্ছে আগামী ১৪ জুলাইয়ের পর। বিমান জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট ও যাত্রী আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেনি ইতালি। ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসও এ সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা ঘোষণা করেনি। শুধু ৭ জুলাই এক সপ্তাহের জন্য অর্থাৎ ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের ফ্লাইট স্থগিত ঘোষণা করে। এছাড়া আর কোন বিধি-নিষেধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে কাতার এয়ারওয়েজের নিজস্ব ফ্লাইট সিডিউলের একটি বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের নাগরিকদের ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইতালির দেয়া নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে। এতেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। খোদ ইতালির গণমাধ্যমেও এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী হেল্প লাইনগুলোতেও এ নিয়ে ভিন্ন কথা জানানো হচ্ছে। শুক্রবার বাংলাদেশ ও ইতালির সব গণমাধ্যমে বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের নাগরিকদের আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইতালি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবেদন হেডলাইন হয়েছে। কিন্তু একদিন পর শনিবার আবার ইতালির বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রবাসী নেতাদের বরাত দিয়ে খবর বেরিয়েছে, ৫ অক্টোবর নয়, এই নিষেধাজ্ঞা ১৪ জুলাই পর্যন্ত। ৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা কখনোই জারি করেনি ইতালি সরকার। শুধু কাতার এয়ারওয়েজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কোন যাত্রী নিবে না। ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী এক সাংবাদিক হেল্প লাইনের উদ্বৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জোসেপে কন্তে বলেছেন, বিভিন্ন ফ্লাইটে ইতালিতে আসা বাংলাদেশীদের ৭০ শতাংশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ থেকে ইতালির উদ্দেশে ফ্লাই করার নিষেধাজ্ঞা আপাতত ১৪ জুলাই পর্যন্ত। তবে এসব দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে সময় বাড়ানো হতে পারে। তবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন কোন বিবৃতি দেয়নি। এ কারণে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে জানা গেছে, কাতার এয়ারওয়েজ তারা নিজস্বভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত কোন ফ্লাইট পরিচালনা করবে না। এ প্রসঙ্গে প্রবাসী সাংবাদিক মাইনুল ইসলাম নাসিম তার ফেসবুক টাইমলাইনে বলেছেন, বাংলাদেশসহ ১৩ দেশ থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে ফ্লাই করার নিষেধাজ্ঞা আপাতত ১৪ জুলাই পর্যন্ত। তবে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের করোনা পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে। বাংলাদেশীদের জন্য ৫ অক্টোবর পর্যন্ত পৃথক কোন নিষেধাজ্ঞা কখনই জারি করেনি ইতালি সরকার। জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোকাব্বির হোসেন জানান, ইতালিতে বাংলাদেশী যাত্রী ও ফ্লাইট নিষিদ্ধ হওয়ার খবর যেভাবে ভাইরাল করা হয়েছে সেটা ঠিক নয়। এভাবে মিডিয়ায় দায়িত্বহীন কা- ঘটাবে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। মিডিয়া কোথায় এ নিউজ পেল সেটারও কোন সূত্র নেই। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে গত ৭ জুলাই ইতালি দূতাবাস থেকে বিমান বাংলদেশ এয়ারলাইন্সকে শুধু ৭ দিনের অর্থাৎ ১৪ জুলাই পর্যন্ত যে দুটো ফ্লাইট ছিল, সেগুলো বাতিল করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকেও সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ রাখে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র ইতালির নাগরিক, সেনজেন ভিসাধারী ইইউ দেশগুলোর নাগরিক ও পাসপোর্টধারী এ বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবেন। তবে ১৪ জুলাইয়ের পর ইতালি এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানানো হয়েছে। কিন্তু ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশী যাত্রী ও ফ্লাইট ইতালিতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমনটি ইতালিও স্বীকার করছে না। ঢাকাস্থ দূতাবাসও এ সম্পর্কে অবহিত নয়। এ বিষয়ে এভিয়েশান বিশেষজ্ঞ আশীষ রায় চৌধুরী বলেন, একদিকে নকল করোনা সনদের ইতালিতে বাংলাদেশীদের নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়া, অন্যদিকে গুজব রটিয়ে সেটাকে আরও ভয়ঙ্কর করে তোলা দেশের জন্য চরম সর্বনাশের। এতে আন্তর্জাতিক বিশ্বে যেভাবে বাংলাদেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে তা কিছুতেই কাম্য নয়। এগুলো খুব সতর্কভাবে মোকাবেলা দরকার।
×