ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিল না দিলে শিল্পের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে

প্রকাশিত: ২১:৩১, ২৮ জুন ২০২০

বিল না দিলে শিল্পের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে

রশিদ মামুন ॥ এবার শিল্পের বিদ্যুত বিল আদায়ে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। আবাসিক গ্রাহকের বিল গ্রহণের ক্ষেত্রে মার্চ থেকে মে তিন মাস বিলম্ব মাশুল মওকুফ করে একবার জুনে বিল দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। এরপর শিল্প গ্রাহকরাও বিতরণ কোম্পানির কাছে বিল পরিশোধের অপরাগতা জানিয়ে চিঠি দেয়। বিতরণ কোম্পানির তরফ থেকে শিল্প গ্রাহকদের বিল পরিশোধের বিষয়ে বিদ্যুত বিভাগের মতামত চাওয়া হয়। বিদ্যুত বিভাগ বলছে শিল্প গ্রাহকরা বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নিতে হবে। সম্প্রতি বিদ্যুত বিভাগে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের সাত নাম্বার সিদ্ধান্তে বলা হয়, শিল্প গ্রাহকদের বিল আদায়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কোনভাবে শিল্পের বিল মওকুফ করা যাবে না। প্রয়োজনে নোটিস দিয়ে শিল্প কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আবাসিক গ্রাহকদের বিল একবারে জুনে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু শিল্প গ্রাহক কম হওয়াতে এটি কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তিনি বলেন, যারা শিল্পে উৎপাদন করতে পারছে না তাদের বিলও বেশি আসছে না। আর উৎপাদন করলে তিনি তো নিশ্চই আয় করছেন তাহলে বিদ্যুত বিল কেন দেবেন না। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র বলছে, উৎপাদন থেকে বিতরণ এই সকল পর্যায়ে চক্রাকারে অর্থের আবর্তন ঘটে। এর শুরুতে রয়েছে উৎপাদনকারী আর শেষ ধাপে রয়েছে ভোক্তা। প্রতিমাসে ভোক্তা যে বিদ্যুত বিল দেয় সেই বিলের টাকা ব্যয় হয় উৎপাদনে। ফলে কোন কারণে ভোক্তা বিল না দিলে উৎপাদন বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা থাকে। যেহেতু বিদ্যুত উৎপাদনে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাই সরকারের একার পক্ষে তা বহন করা কঠিন। এছাড়া উৎপানের তেল, গ্যাস এবং কয়লা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। জ্বালানি যাদের কাছ থেকে আমদানি করা হবে তারা বাকিতে দেবে না। সঙ্গত কারণে বিল আদায়ের কোন বিকল্প নেই। বিদ্যুত বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আবাসিক গ্রাহকদের মিটার না দেখে বিল করার ক্ষেত্রে ওভার বিলিং হয়েছে। বিতরণ কোম্পানির ইচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য এখন বিদ্যুত বিভাগ এ বিষয়ে জোরেশোরে কিছু বলতেও পারছে না। এজন্য অনেকে সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় যে কোন মূল্যে বিল আদায় করার জন্য চাপ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। বিতরণ কোম্পানি সূত্র বলছে, অনেক শিল্প গ্রাহকের বেশ আগের বিলও বকেয়া রয়েছে। যেহেতু সারা বিশ্বে এখন মহামারী চলছে। তাই তাদের কাছে বিল চাইতে গেলে তারা এখন মহামারীর দোহাই দিয়ে বিল দিচ্ছে না। এর সঙ্গে এখন যে বিদ্যুত ব্যবহার করছে সেই বিলও দিতে চাইছে না। বিতরণ কোম্পানির তরফ থেকে বিদ্যুত বিভাগকে বলা হয়েছে, শিল্প গ্রাহকদের বকেয়া বিদ্যুত বিল আদায়ের জন্য মাইকিং, টেলিফোনে অনুরোধ এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য নোটিস দেয়া হচ্ছে। তবে এতসব কঠোরতার মধ্যেও অনেক শিল্প গ্রাহক বিল দেয়া নিয়ে নানা রকম টালবাহানা করছে। প্রসঙ্গত আবাসিক গ্রাহকদের বিল প্রদানে তিন মাসের ছাড় দিয়ে গোল পাকিয়ে ফেলেছে বিতরণ কোম্পানি। কোন কোন বিতরণ কোম্পানি গ্রাহকের ৩০০ ভাগ পর্যন্ত অতিরিক্ত বিল করেছে। এতে সারাদেশেই ব্যাপক সমালোচনা চলছে। তবে বিদ্যুত বিভাগের তরফ থেকে এখন এসে বলা হচ্ছে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য সাত দিনের সময় দিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
×