ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ

শব্দ দূষণের যন্ত্রণা থেকে আপাতত মুক্ত রাজধানীবাসী

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ৫ জুন ২০২০

শব্দ দূষণের যন্ত্রণা থেকে আপাতত মুক্ত রাজধানীবাসী

শাহীন রহমান ॥ করোনার প্রভাবে জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও পরিবেশের ক্ষেত্রে পড়েছে তার বিপরীত প্রভাব। এর প্রভাবে বদলে গেছে ঢাকার পরিবেশও। গত দু’মাস ধরে চিরায়ত শব্দ দূষণের যন্ত্রণার হাত থেকে অনেকটাই মুক্ত রাজধানীবাসী। তেমনি ঢাকার বায়ুও অনেকটা নির্মল। বায়ুদূষণ এখন বিপদসীমার অনেক নিচে নেমে গেছে। দূষণে ধুঁকতে থাকা ফুসফুস এখন ক্রমেই সতেজ হয়ে উঠছে। ঢাকার বনানীও অনেকটা সবুজে ঢেকে আছে। ফলে ঢাকার সৌন্দর্য আগের চেয়ে বেড়েছে অনেক। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্বাভাবিক অবস্থায়ও যেন এই পরিবেশ বজায় থাকে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ। তবে করোনার প্রভাবে এবার দিবসটি পালনে নেই কোন আনুষ্ঠানিকতা। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশ সংগঠনের পক্ষ থেকেও পরিবেশ দিবস উপলক্ষে নেয়া হয়নি কোন কর্মসূচী। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে প্রকৃতিকে বাঁচানোর এখনই সময়। এদিকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিশ্বের অনেক দেশেই লকডাউনের কারণে মানুষ ঘরে থাকায় এবং বিভিন্ন ধরনের কল-কারখানা বন্ধ থাকায় কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমে গেছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের পরিবেশের উপরও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলী ইকবাল হাবিব বলেন, বায়ুদূষণ নগরীতে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে। সমুদ্র কিনারাগুলোতে ডলফিন লুকোচুরি করছে। নগরজুড়ে পাখি এবং প্রজাপতি যেন ফিরে এসেছে। শব্দ দূষণের হাত থেকে বিরাট পরিত্রাণ পাওয়া গেছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, লকডাউনের কারণে ঢাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ আরও সবুজ হয়ে উঠেছে। জলগুলো তাকিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে সেগুলো পরিশোধনের পথে চলে যাচ্ছে। গাছগুলো গাঢ় সবুজ রঙ ধারণ করেছে। মনে হয় যেন কেউ পরিষ্কার করে রেখে গেছে। আসলে তা নয়। বরং বাতাসে ধুলার পরিমাণ কমে গেছে। তারা বলেন, গ্রামে গ্রামে ক্ষেতে-খামারে সাদা বক ফিরে এসেছে। এর থেকেও বোঝা যায় যে, পরিবেশ তার নিজস্ব ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করছে। এদিকে মানুষের কোলাহল না থাকায় ঢাকার উদ্যানগুলোও এখন সবুজে ছেয়ে আছে। করোনার প্রভাবে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশের সবকটি ফটক তালাবদ্ধ রয়েছে। ফলে বর্তমানে উদ্যানজুড়ে কেবল শূন্যতা ও সুনসান নীরবতা। লাখো মানুষের ঘরবন্দী থাকার সুযোগে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ভিন্নরূপে সেজেছে। পরিণত হয়েছে সবুজ গালিচায়। ছোট বড় অসংখ্য গাছ সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে। বিভিন্ন গাছে নানান রঙের ফুলের ছড়াছড়ি। মানুষজনের উপস্থিতি না থাকায় গাছে গাছে কোকিল ও দোয়েলসহ বিভিন্ন পাখির কলরব শোনা যায়। করোনায় শুধু ঢাকার পরিবেশ নয়। সারাদেশের পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গত মার্চ থেকে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে সব পর্যটন কেন্দ্রে। নিষেধাজ্ঞা রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতও। সৈকতের এই সুনসান নীরবতায় সবুজ গালিচায় ভরে উঠেছে। টিআইবির আহ্বান ॥ জীববৈচিত্র্যের অমূল্য আধার সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। তাই জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষার্থে সাংবিধানিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতার কার্যকর প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এবারের এই আন্তর্জাতিক দিবসের মূল প্রতিপাদ্য জীববৈচিত্র্যের প্রতি সরকার ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এই আহবান জানায়।
×