ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সঙ্কট মোকাবেলায় খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে

প্রকাশিত: ২৩:১১, ২ জুন ২০২০

সঙ্কট মোকাবেলায় খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনার কারণে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলা করতে হলে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। খাদ্য উৎপাদনের বর্তমান ধারা আরও বৃদ্ধি করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে বলেও জানান মন্ত্রী। আগামীর ফসল আমন ও রবি মৌসুমে বীজ, সার, সেচ প্রভৃতিতে যাতে কোন সমস্যা না হয়, সঙ্কট তৈরি না হয় সেজন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সোমবার সকালে মন্ত্রী তাঁর সরকারী বাসভবন থেকে আমন ও রবিশস্য উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও সংস্থাপ্রধানদের সঙ্গে অনলাইন সভায় এসব কথা বলেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্য উৎপাদনে যে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে এবং উৎপাদনের যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি চলমান রয়েছে সেখানে থেমে গেলে হবে না। সেজন্য তা আরও বেগবান ও ত্বরান্বিত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। আউশ ও আমনের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আউশের জন্য বীজ, সার, সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মহামারী করোনার করাল গ্রাসে আজ পুরো পৃথিবী বিপর্যস্ত। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী, আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে কোন কোন দেশে খাদ্য সঙ্কট বা দুর্ভিক্ষও হতে পারে। এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে ও অন্যান্য ভিডিও কনফারেন্সে বার বার কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছেন। কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা অনুযায়ী করোনার দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির বর্তমান ধারা শুধু অব্যাহত রাখা নয়, তা আরও বেগবান ও ত্বরান্বিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে। যাতে দেশে খাদ্যের কোন ঘাটতি না হয়, দুর্ভিক্ষ না হয়। বরং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের সম্ভাব্য খাদ্য সঙ্কটে আর্তমানবতার সেবায় বাংলাদেশ যাতে তার উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য নিয়ে সহযোগিতা করতে পারে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমন আবাদের এলাকা বাড়ানোর সুযোগ খুব একটা নেই। তবে, উন্নতমানের জাত ও মানসম্পন্ন পর্যাপ্ত বীজ সরবরাহ এবং গবেষণা পর্যায়ে বিভিন্ন জাতের ঘোষিত হেক্টর প্রতি ফলন ও কৃষকের মাঠে উৎপাদিত হেক্টর প্রতি ফলনের পার্থক্য কমিয়ে এনে উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। পাশাপাশি, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যেখানে বছরে একটি মাত্র ফসল হয় সেখানে কিভাবে সারা বছর বিভিন্ন ফসল ফলানো যায়, এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সভায় জানানো হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরে আমন আবাদের প্রস্তাবিত লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫৯ লাখ হেক্টর ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৫৪ লাখ টন চাল। আমন উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কম ফলনশীল জাতের আবাদ কমিয়ে আধুনিক/উফশি জাতের সম্প্রসারণ ও হাইব্রিড জাতের এলাকা বৃদ্ধি করা হবে। উন্নত জাতের ধান, মানসম্পন্ন বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, সুষম সারের নিশ্চয়তা, পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা, সেচ খরচ হ্রাসকরণসহ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রবি ফসল (গম, আলু, মিষ্টি আলু, শীতকালীন ভুট্টা, ডালজাতীয় ফসল, তেলবীজ জাতীয় ফসল, মসলা ও সবজির) লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে।
×