ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণ কি জঙ্গীদের নাশকতা?

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১ মার্চ ২০২০

চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণ কি জঙ্গীদের নাশকতা?

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম মহানগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণের ঘটনার রহস্যের এখনও কূলকিনারা হয়নি। শনিবার ঢাকা থেকে আসা বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সংগৃহীত আলামতগুলো পরীক্ষা করে দেখছে এটি নিছক কোন দুর্ঘটনা, নাকি জঙ্গীদের পরিকল্পিত নাশকতা। তবে পুলিশ কোন সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছে না। কোন ধরনের বিস্ফোরক দিয়ে কোন কায়দায় ঘটানো হয়েছে, তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ। ষোলশহর দুই নম্বর গেট মোড়ে শুক্রবার রাতে পুলিশ বক্সে রহস্যজনক এ বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন। এর মধ্যে সার্জেন্ট মোঃ আরাফাতের শরীরের সাত শতাংশ এবং আলাউদ্দিনের আট শতাংশ পুড়ে গেছে। রাতেই তাদের ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। দুই পুলিশ সদস্য ছাড়াও নওশাদ (৮), জাহিদ (২৮) ও আকন (২৬) নামের তিন পথচারীও আহত হয়েছেন বিস্ফোরণে। তবে তাদের আঘাত অতটা গুরুতর নয়। পুলিশ জানায়, প্রথমে ঘটনাটিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটজনিত দুর্ঘটনা মনে করা হলেও পরে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ওটা ছিল বিস্ফোরণ। কিন্তু বিস্ফোরণটা কিসের তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাতেই পুলিশের সোয়াট টিমের সদস্যরা অকুস্থল ঘিরে ফেলে এবং সেখান থেকে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়। সিএমপি কমিশনার মোঃ মাহবুবর রহমান সাংবাদিকদের জানান, অকুস্থলে কোন ধরনের সার্কিট বা ডিভাইস পাওয়া যায়নি। তবে এটা যে নাশকতা তা অনেকটা নিশ্চিত। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার হওয়া সম্ভব হয়নি। স্থানীয় কোন প্রযুক্তিতে এ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঢাকায় পুলিশ বক্সে যে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছিল সে রকমই হতে পারে। দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে ঘটানো হয়েছিল বিস্ফোরণ। পুলিশী তৎপরতা এখনও তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে কাজ করছে ঢাকা থেকে আসা ১১ সদস্যের একটি টিম, সিএমপি, নগর গোয়েন্দা পুলিশ, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এবং সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক শনিবার জনকণ্ঠকে জানান, ঢাকা থেকে টিম এসে অকুস্থল পরিদর্শন এবং সংগৃহীত আলামতগুলো পরীক্ষা করছে। তিনি বলেন, বিস্ফোরণটা আসলে কিসের তা বলার মতো উপসংহারে আমরা এখনও পৌঁছাইনি। বিশেষজ্ঞ দলের বক্তব্যের পর পরিষ্কার হবে। ঢাকায় এর আগে পুলিশ বক্সগুলো যে ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছিল তার সঙ্গে চট্টগ্রামের এ হামলার কিছুটা মিল রয়েছে। ঘটনাটি জঙ্গীদের পরিকল্পিত হামলা বা নাশকতা কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমরা কোন ধরনের সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি। আলামত পরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর জন্য আরও অন্তত দুদিন সময় লাগতে পারে। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। সেজন্য থানা, ফাঁড়ি, পুলিশ বক্সসহ প্রতিটি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
×