ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ মোমবাতি- বঙ্গবন্ধুর নামে

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 লক্ষ মোমবাতি- বঙ্গবন্ধুর নামে

রিফাত-বিন-ত্বহা, নড়াইল থেকে ॥ এ এক চোখ ধাঁধানো আয়োজন। একটি দুটি নয়, এক লাখ মোমবাতি জ্বেলে নড়াইলবাসী স্মরণ করবে অমর একুশের ভাষা শহীদদের। নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে ‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এই সেøাগানে প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ণাঢ্য আয়োজন করেছে একুশের আলো উদ্যাপন পর্ষদ। একুশে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালনের সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’ এই গান দিয়ে শুরু হবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পরিবেশনায় গণসঙ্গীত ও কবিতা। নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী উপভোগ করবেন এই মনোহর দৃশ্য। একুশের আলো উদ্যাপন পর্ষদের উদ্যোগে ব্যতিক্রমধর্মী এই স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজনের কথা এখন আর নড়াইলের মধ্যে নেই, এখন তা ছড়িয়ে গেছে সমগ্র বাংলাদেশ তথা বিশ্বের দরবারে। ভাষা শহীদদের স্মরণে এবারের লাখো মোমবাতি প্রজ্বালন অনুষ্ঠান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। এবার বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের দৃশ্য মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। এ খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। একুশ ফেব্রুয়ারিতে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে নড়াইলবাসী অপেক্ষা করেন সন্ধ্যার মোমবাতি প্রজ্বালনের দৃশ্য দেখার জন্য। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠ প্রাঙ্গণ আলোকিত হয়ে ওঠে। একে একে লাখো মোমবাতিগুলো জ্বলে ওঠে। ধীরে ধীরে আকার স্পষ্ট করে দেয় নানা বর্ণমালার, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, জাতীয় সংসদ ভবন, শাপলা ফুল আর বিভিন্ন আল্পনার। এর মধ্যেই মাঠের পাশে তৈরি করা মঞ্চে শুরু হয় ভাষার গান আর কবিতা আবৃত্তির। প্রায় দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানের খবর আর এই জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে পড়েছে অনেক দূর। একুশ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ৬টা ১৫ মিনিটে প্রজ্বালন শুরু হবে মোমবাতি। অন্ধকার ছাপিয়ে বাহারি ডিজাইনের আলোয় আলোকিত হয়ে যাবে বিশাল এই মাঠ। সেই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৬৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ২০০টি ফানুস ওড়াবে। শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, জাতীয় ফুল শাপলা, বাংলা বর্ণমালা ও প্রজš§ ৭১, শিখা অনির্বাণ আল্পনাসহ বিভিন্ন ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে মোমবাতি প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে। আয়োজকরা আশা করছেন এবার এক লাখ মোমবাতি জ্বালিয়ে দেশের বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি আর সঙ্গীতশিল্পীদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য হবে অনুষ্ঠানটি। প্রতিবছরই আয়োজনে সেøাগান থাকে ‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করবে একুশের আলো’। এ বিষয়ে জানতে চাইলে একুশের আলো উদ্যাপন পর্ষদের আহ্বায়ক প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান ও সদস্য সচিব কচি খন্দকার জনকণ্ঠকে জানান, আমাদের জ্ঞানের যে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাষ্প, সমাজের কূপম-ূকতা- সামগ্রিক এসব অন্ধকারের বিরুদ্ধে একুশের আলো। এ আলো শুধু মাঠের আলো নয়। সামগ্রিক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জেগে ওঠার প্রত্যয় জাগানিয়া আলো। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শরফুল আলম লিটু জানান, ভাষা শহীদদের স্মরণে এবারের লাখো মোমবাতি প্রজ্বালন অনুষ্ঠান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের দৃশ্য মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। একুশে ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে কুড়িরডোব মাঠে লাখো মোমবাতি জ্বেলে শহরের কুড়িরডোব মাঠে ভাষা শহীদদের স্মরণ করবে নড়াইলবাসী। একই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৬৯তম বার্ষিকীতে ২০০ ফানুস ওড়ানো হবে। ১৯৯৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নড়াইলে ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এ আয়োজন সফল করতে এক মাস পূর্ব থেকে সাংস্কৃতিক কর্মী, সেচ্ছাসেবক ও শ্রমিকরা কাজ শুরু করেন। তিন শতাধিক পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক মাঠের চারপার্শ্বের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষা করেন।
×